বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সংঘর্ষ-সহিংসতার পাশাপাশি অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি এড়াতে মার্কিন নাগরিকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বৃহস্পতিবার স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ‘লেভেল-২ অ্যাডভাইজরি’ বা বাড়তি সতর্কবার্তা জারি করা হয়।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কালের অপরাধ, সন্ত্রাস ও অপহরণের হালনাগাদ তথ্যর ভিত্তিতে স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান করা হচ্ছে। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে অপরাধ ও সন্ত্রাস বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু এলাকা আগের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ক্ষেত্রে লেভেল-৩ সতর্কবার্তা জারি করা হয়। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, অপরাধ, সন্ত্রাস, অপহরণ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় পার্বত্য এলাকায় ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নাগরিকদের পুনর্বিবেচনা করতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, ভ্রমণকারীদের জনাকীর্ণ এলাকায় পকেটমারদের সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোতে চুরি, ছিনতাই, হামলা এবং মাদক পাচার সামনের শ্রেণির অপরাধ। তবে বিদেশিরা জাতীয়তার কারণে এসব অপরাধীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন—এমন কোনো ইঙ্গিত নেই। সময় ও পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এসব অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে।
সন্ত্রাসী হামলা সামান্য বা কোনো সতর্কতা ছাড়াই ঘটতে পারে। সন্ত্রাসীরা পাবলিক এলাকা যেমন পর্যটন স্থান, পরিবহন কেন্দ্র, বাজার/শপিংমল, রেস্তোরাঁ, উপাসনালয়, স্কুল ক্যাম্পাস এবং সরকারি সেবা সংস্থাগুলোতে এসব হামলা করতে পারে।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট আরও বলেছে, বাংলাদেশে আগামী সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের সমাবেশ এবং অন্যান্য নির্বাচনী কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। সাধারণ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভের মাত্রা আরও বাড়বে।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশে সফরকারীদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। তাঁদের মনে রাখা উচিত যে শান্তিপূর্ণ সমাবেশও সংঘর্ষ-সহিংসতায় রূপ নিতে পারে।
নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মচারীরা চলাচল এবং ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু নিষেধাজ্ঞার অধীন রয়েছেন। সেই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং সরকারের সীমিত জরুরি নিরাপত্তা সেবার কারণে বাংলাদেশে মার্কিন নাগরিকদের জরুরি পরিষেবা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য এরই মধ্যে ঘোষিত ভিসা নীতি কার্যকর করার পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাজনৈতিক দল, সরকারি কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ যে কেউ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাদানকারীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে গত মাসে জানিয়েছ স্টেট ডিপার্টমেন্ট।
এএ