তিন সিনিয়রের ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪৫
স্পোর্টস ডেস্ক প্রকাশ: ২০২৩-১০-১৩ ১৮:৫৫:৫৯
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। দলীয় ৫৬ রানেই ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন অভিজ্ঞ মুশফিক ও অধিনায়ক সাকিব। শেষ দিকে রিয়াদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৫ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) চেন্নাইয়ে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ডের পেসার ট্রেন্ট বোল্টকে প্রথম বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলেন লিটন। লেংথ বলটি ঘুরিয়ে ফ্লিক করতে গিয়ে ডিপ-ফাইন লেগে থাকা ম্যাট হেনরির কাছে ক্যাচ দিয়ে বসেন। হতভম্ব লিটন ম্যাচের প্রথম বলেই গোল্ডেন ডাক মেরে বসেন। নিজের ৩০তম জন্মদিনে লজ্জায় মাথা নিচু করে বিদায় নেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
ম্যাচের প্রথম বলেই লিটন দাসের বিদায়ের পর তানজিদ হাসান তামিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে ব্যর্থ হন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালের বদলি হিসেবে বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পাওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী ওপেনার তানজিদ।
আগের দুই ম্যাচের মতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে আসেন কিউই পেসার লকি ফার্গুসন। তার ওভারের শেষ বলে মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ডেভন কনওয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। বিদায়ের আগে ১৭ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ১৬ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর বড় দায়িত্ব এসে পড়েছিল মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্তর কাঁধে। কিন্তু সে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি তারাও। মাত্র ৪ বলের ব্যবধানে দুজনেই সাজঘরে ফেরেন। এতে দলীয় ৫৬ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা।
১২তম ওভারে লকি ফার্গুসনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন উইকেটে থিতু হওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ-ফাইন লেগে ম্যাট হ্যানরির হাতে ধরা পড়েন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৩০ রান করতে খেলেন ৪৬ বল।
এরপর নাজমুল হোসেন শান্তও ফেরেন সাজঘরে। আক্রমণে এসেই সাফল্য পান ফিলিপস। ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে ডেভন কনওয়ের হাতে ধরা পড়েন শান্ত।
৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খাঁদের কিনারায় পড়ে গিয়েছিল লাল-সবুজেরা। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক সাকিব ও মুশফিকুর। এরপর ৫২ বলে ক্যারিয়ারের ৪৮তম ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। কিউই পেসার লকি ফার্গুসনের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।
এরপর রাচিন রবীন্দ্রকে একটি করে চার-ছক্কা মেরে আক্রমণের ইঙ্গিত দেন সাকিব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেজাজ হারিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন টাইগার অধিনায়ক। ব্যক্তিগত ৪০ রানে সাকিব ফিরলে ভাঙে মুশফিকের সঙ্গে তার ৯৬ রানে জুটি।
সাকিবের বিদায়ের পর সাজঘরে ফেরেন অভিজ্ঞ মুশফিকুরও। কিউই পেসার ম্যাট হেনরির বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেন ৭৫ বলে ৬৬ রান।
এরপর শেষ দিকে মাহমুদঊল্লাহ রিয়াদের ৪১ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৪৫ রান তুলে টাইগাররা।
কিইউদের হয়ে ৪৯ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন লোকি ফার্গুসন। এ ছাড়া ট্রেন্ট বোল্ট ও ম্যাট হেনরি দুটি করে এবং স্যান্টনার ও ফিলিপস একটি উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৪৫/৯ (লিটন ০, তানজিদ ১৬, মিরাজ ৩০, শান্ত ৭, সাকিব ৪০, মুশফিক ৬৬, হৃদয় ১৩, মাহমুদউল্লাহ ৪১*, তাসকিন ১৭, মোস্তাফিজ ৪, শরিফুল ২*; বোল্ট ২/৪৫, হেনরি ২/৫৮, ফার্গুসন ৩/৪৯, স্যান্টনার ১/৩১, ফিলিপস ১/১৩, রবীন্দ্র ০/৩৭, মিচেল ০/১১)।
এএ