চলতি সপ্তাহে কমেছে ভারতীয় আধাসেদ্ধ চালের দাম। চাল রফতানিতে দেশটির সরকারের আরোপিত শুল্কনীতি শেষ হওয়ার কথা এ মাসে। এ নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা থাকায় ক্রেতারা ভারত থেকে চাল আমদানি স্থগিত করেছেন। এতে চাহিদা কমায় দাম নিম্নমুখী হয়েছে। খবর রয়টার্স।
বর্তমানে ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক। শুক্রবার প্রতি টন ৫ শতাংশ ভাঙা সেদ্ধ চাল বিক্রি হয়েছে ৫১৫-৫২৫ ডলারে। গত সপ্তাহেও টনপ্রতি দাম ছিল ৫২০-৫৩০ ডলার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে ১০ ডলার। মূলত রফতানি শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ক্রেতারা ভারত থেকে চাল ক্রয় স্থগিত করছেন। শুল্ক প্রত্যাহার হলে আরো কম খরচে ভারত থেকে চাল কিনতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।
চালের রফতানি বাণিজ্যে যুক্ত এমন একজন মুম্বাইভিত্তিক ডিলার বলেন, ‘আমদানিকারকরা অপেক্ষা করছেন সরকার ১৫ অক্টোবরের পরেও রফতানি শুল্ক বহাল রাখে নাকি প্রত্যাহার করে সে সিদ্ধান্তের।’
ভারত গত ২৫ আগস্ট সেদ্ধ চাল রফতানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। সে সময় ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ শুল্কনীতি কার্যকর থাকার সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ও দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে রফতানি নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত, যার অংশ হিসেবে শুল্ক আরোপ করেছিল দেশটির বাণিজ্য বিভাগ। দিল্লির এমন সিদ্ধান্তে বিশ্ববাজারে শস্যটির দাম ১৫ বছরের সর্বোচ্চে উঠে আসে। সরবরাহ ঘাটতির আশঙ্কায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম রেকর্ড ৫২০-৫৪০ ডলার স্পর্শ করে। যদিও পরবর্তী সময়ে সরবরাহ উদ্বেগ কমে আসায় দাম নিম্নমুখী হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘সরকার শুল্ক বহাল রাখার সময়সীমা ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়াতে চায়।’ এদিকে থাইল্যান্ডের ৫ শতাংশ ভাঙা চালের দাম গত সপ্তাহের ৫৮৫ ডলার থেকে বেড়ে টনপ্রতি ৫৮০-৬০০ ডলারে উঠেছে।
ব্যাংককভিত্তিক এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, দেশটির উচ্চ অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও ডলারের বিপরীতে থাই মুদ্রা বাথের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। পাশাপাশি এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে থাই চালের চাহিদা বাড়ায় সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে, ভিয়েতনামি ৫ শতাংশ ভাঙা চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি টনে ৬১৫-৬২৫ ডলারে। এক সপ্তাহ আগেও দাম ছিল ৬১০-৬২০ ডলারের মধ্যে। হো চি মিনভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলছেন, ‘ইন্দোনেশিয়া আরো চাল কেনার ঘোষণা দেয়ায় বাজারে সরবরাহে চাপ পড়েছে। এতে দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে গ্রীষ্ম-শরৎ মৌসুমে ধানের ফলন কমে যাওয়ায় বাজারে চালের পর্যাপ্ত জোগান নিশ্চিত হয়নি।’
এনজে