ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত শুরুর পর ফের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৯৩ ডলার স্পর্শ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে জ্বালানিটির সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তাকেই এজন্য দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স।
আইসিই ফিউচারস বুধবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ২ ডলার ৫৪ সেন্ট বা ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৯২ ডলার ৪৪ সেন্টে। অন্যদিকে, নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ২ ডলার ৫৪ সেন্ট বা ২ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৮৯ ডলার ২০ সেন্টে।
বিশ্লেষকরা জানান, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। ফলে এ অঞ্চল থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল সরবরাহ ব্যাপক মাত্রায় ব্যাহত হতে পারে। ইরান এরই মধ্যে ওআইসির সদস্য দেশগুলোর প্রতি ইসরায়েলের ওপর জ্বালানি তেল নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর মিত্র জোট এখনো কোনো পরিকল্পনা জানায়নি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের জেরে জ্বালানি তেলের দুই বাজার আদর্শের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩ ডলারেরও বেশি বেড়ে দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চে।
এদিকে ইরান এ সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে অন্যতম জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশটি আবারো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারে। সংঘাতের কারণে হরমুজ প্রণালি দিয়েও জ্বালানি তেল সরবরাহ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের ২০ শতাংশ জ্বালানি তেল সরবরাহ হয় এ প্রণালি দিয়ে। এ যুদ্ধের কারণে ব্রেন্টের দাম অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের গণ্ডি স্পর্শ করতে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
অন্যদিকে, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার পাশাপাশি আরো কিছু বিষয় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। এর মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্রে মজুদ পরিস্থিতি। আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট জানায়, ১৩ অক্টোবর সমাপ্ত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ আশঙ্কার চেয়ে বেশি কমেছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা ওই সপ্তাহে তিন লাখ ব্যারেল করে মজুদ কমার আভাস দিয়েছিল। কিন্তু মজুদ ৪৪ লাখ ব্যারেল করে কমেছে।
জ্বালানি তেলের চাহিদায় উত্থান-পতনে বড় ভূমিকা রয়েছে চীনের। লম্বা সময় ধরে দেশটির অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তার কারণে চাহিদা প্রবৃদ্ধি চাপের মুখে ছিল। তবে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতিতে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি এসেছে। ফলে চাহিদা যেমন বেড়েছে তেমনি জ্বালানি তেলের বাজারদরও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে।
এনজে