ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং জেলায় উৎপাদিত বিশেষ জাতের চা দার্জিলিং চা। বৈশ্বিকভাবে জনপ্রিয় এ চা রফতানি চলতি বছর ১০ শতাংশ কমতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। মূলত বিশ্ববাজারে চাহিদা কমায় রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।
ভারতীয় চা রফতানিকারক সমিতির চেয়ারম্যান অংশুমান কানোরিয়া বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে চলমান সংকটের কারণে চলতি বছর দার্জিলিং চা রফতানি গত বছরের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ কমতে পারে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ডলারের বিপরীতে জাপানের মুদ্রার বিনিময় হার কমে যাওয়ায় রফতানিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
বিশেষ জাতের এ চা রফতানিতে ভারতের অন্যতম দুই বাজার ইউরোপ ও জাপান। রাশিয়া ও ইরানেও এ চায়ের বড় বাজার হিস্যা রয়েছে। কানোরিয়া বলেন, ‘রাশিয়া ও ইরানে আমরা বাজার হারিয়েছি। ইরান বর্তমানে সীমিত পরিমাণে দার্জিলিং চা কিনছে।’
ভারতের চা বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, গত বছর মোট ৩০ লাখ কেজি দার্জিলিং চা রফতানি করা হয়েছে। সে বছর মোট ৬৯ লাখ ৩০ হাজার কেজি দার্জিলিং চা উৎপাদন হয়। ২০২১ সালে এর পরিমাণ ছিল ৭০ লাখ ১০ হাজার কেজি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দার্জিলিং চা উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ কমে ৪১ লাখ ৬০ হাজার কেজিতে নেমেছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণেও উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কানোরিয়া বলেন, ‘চলতি বছর শেষে দার্জিলিং চা উৎপাদন ৬০ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৭০ লাখ কেজি ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।’
ভারতে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দার্জিলিং চা উৎপাদন নিম্নমুখী। ২০১১ সালে ৯১ লাখ ৪০ হাজার কেজি দার্জিলিং চা উৎপাদন হলেও ২০১৬ সালে তা ৮১ লাখ ৩০ হাজার কেজিতে নেমে আসে। এর পেছনে জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রমিক সংকট, লোকসান ও উৎপাদন সক্ষমতা কমে যাওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। এছাড়া অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অনেকেই বাগান বা জমি বিক্রি করে দিয়েছেন।
অংশুমান কানোরিয়া বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় চলতি বছর দার্জিলিং চা উৎপাদন ব্যয় অন্তত ১০ শতাংশ বেড়েছে, যার প্রধান কারণ শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি। এদিকে চলতি বছর গড় দামও ১০ শতাংশ কমার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে উৎপাদন অনেকটাই অলাভজনক হয়ে দাঁড়াবে।
এনজে