চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্যের মজুদ পূর্বাভাস ৬০ লাখ টন কমিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি)। চলতি মৌসুমের শুরুতে মজুদস্বল্পতা ও উৎপাদন কমার আশঙ্কায় বৈশ্বিক সমাপনী মজুদে টান পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে খাদ্যশস্যের সরবরাহ যেমন সংকোচনের মুখে পড়বে, তেমনি তীব্র আকার ধারণ করবে খাদ্যনিরাপত্তা ও মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি। খবর ওয়ার্ল্ড গ্রেইন ডটকম।
চলতি বছরের জুনে ২০২৩-২৪ মৌসুম শুরু হয়েছে, যা আগামী বছরের জুলাইয়ে শেষ হবে। সম্প্রতি ‘অক্টোবর গ্রেইন মার্কেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আইজিসি জানায়, চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্যের সমাপনী মজুদ দাঁড়াতে পারে ৫৮ কোটি ২০ লাখ টনে। নয় বছরের মধ্যে এটিই হতে যাচ্ছে সর্বনিম্ন সমাপনী মজুদ। এছাড়া গত মৌসুমের তুলনায় এ মুজদ ২ শতাংশ কমবে।
এদিকে খাদ্যশস্যের উৎপাদন পূর্বাভাসও কমিয়েছে আইজিসি। সংশোধিত পূর্বাভাসে সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ২২৯ কোটি ২০ লাখ টন, যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ২ শতাংশ কম।
আর্জেন্টিনা, যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেনসহ শীর্ষ উৎপাদক দেশগুলোর কৃষি খাত বৈরী আবহাওয়ার সঙ্গে লড়ছে লম্বা সময় ধরে। খরা, বন্যা ও দাবদাহে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। জ্বালানি, সার ও উৎপাদন উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। তার ওপর সরবরাহ চেইনে জটিলতা তো রয়েছেই। এদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও খাদ্যশস্য রফতানিতে বিভিন্ন দেশের আরোপিত বিধিনিষেধও উৎপাদন কমে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।
আইজিসি জানায়, নতুন এ মৌসুমে গম, যব ও যই উৎপাদন ব্যাপক হারে কমতে পারে। তবে এতে কিছুটা ভারসাম্য আনবে ভুট্টা ও শরগামের (একধরনের শস্য) ঊর্ধ্বমুখী উৎপাদন। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্র শস্যগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রাখবে।
২০২৩-২৪ মৌসুমে সয়াবিনের বৈশ্বিক উৎপাদন ৩৯ কোটি ৩০ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে বলে নতুন পূর্বাভাসে জানিয়েছে আইজিসি। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়েসহ দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলো তেলবীজটির উৎপাদন বৃদ্ধিতে রসদ জোগাবে। তবে চীন, ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক চাহিদার সম্ভাবনা থাকায় এটির ব্যবহার রেকর্ড স্পর্শ করতে পারে বলেও জানিয়েছে আইজিসি।
এনজে