বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় গ্রেফতার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দীর আটদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১ নভেম্বর) হাসান সারওয়ার্দীকে আদালতে উপস্থিত করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। অন্যদিকে সারওয়ার্দীর জামিন ও রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে আটদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাতে সাভার থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গত ২৯ অক্টোবর মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা করেন। মামলায় বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেয়া মিয়ান আরাফিসহ অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতারের পর গত ৩০ অক্টোবর মিয়ান আরাফিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করে। ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুদ্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা, সরকারি গাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। একপর্যায়ে দুপুর ৩ টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
এজাহারে বাদী আরও বলেন, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টার মধ্যে আসামি মিয়ান আরাফি, হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মী একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় ১ নম্বর আসামি মিয়ান আরাফি নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি। সেখানে ১ নম্বর আসামি মিয়ান আরাফি বক্তব্যে দাবি করেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। এই আসামি আরও দাবি করেন, তিনি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
এজাহারে বাদি আরও অভিযোগ করেন, ২ নম্বর আসামি হাসান সারওয়ার্দী এবং ৩ নম্বর আসামি ইশরাক হোসেন তাকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। ১ নম্বর আসামি অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি করে সারাদেশে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।
এজাহারে বলা হয়, ওই সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে ১ নম্বর আসামি মিয়ান আরেফির বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশের আইন শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটে।
এএ