পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে শিল্পাঞ্চল সাভার ও পাশের উপজেলা ধামরাইয়ের প্রায় ১৩০টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া, ছয়তলা, নরসিংহপুর ও কাঠগড়া এলাকার কারখানাগুলোর গেটে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ দেখা গেছে। কারখানায় এসে কাজ না করে বসে থাকা ও ভাঙচুর করাসহ বেশ কিছু কারণ বন্ধের নোটিশে উল্লেখ করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
সকাল ১০টার পর বেশ কিছু কারখানার সামনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা কারখানার সামনে এসে বন্ধের নোটিশ দেখে ফিরে যাচ্ছেন।
কেউ কেউ সড়কে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশি তৎপরতায় তা তারা করতে পারেননি।
বন্ধের নোটিশ টাঙানো কারখানাগুলো মধ্যে কয়েকটি হলো, টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের দুই পাশে অবস্থিত দ্য রোজ ড্রেসেস লিমিটেড, দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেড, অনন্ত গার্মেন্টস লিমিটেড, হা-মীম, শারমীন, পাইওনিয়ার লিমিটেড এবং আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড, ডুকাটি অ্যাপারেলস লিমিটেড, আগামী এ্যাপারেলস লিমিটেড, ক্রসওয়্যার লিমিটেড, ছেইন এ্যাপারেলস লিমিটেড, টেক্সটাউন লিমিটেড, অরনেট নিট গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার আগামী এ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার নোটিশে বলা হয়, ‘গত ৩১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত শ্রমিকরা কারখানায় এসে ফেইস পাঞ্চ করে। তারা কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রেখে চিৎকার চেচামেচি করে।
পরে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পর কারখানা ত্যাগ করে বাইরে চলে যায়। এতে করে নিরুপায় হয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। কিন্তু বেতনের আগ পর্যন্ত ৫ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত শ্রমিকরা কাজ চালিয়ে যায়। বেতন হয়ে গেলে ৮ নভেম্বর আবারও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি করে শ্রমিকরা।
সাধারণ শ্রমিকদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে মিছিল করতে করতে কারখানা গেটে চলে যায়। এমতাবস্থায় আবারও কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি দিতে বাধ্য হয়। তাই কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানার সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে ৯ নভেম্বর কারখানা বন্ধ রাখে। এমন কার্যকলাপ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃঙ্খলতা ও বে-আইনি ধর্মঘটের শামিল। তাই কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ১১ নভেম্বর হইতে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১৩(১) ধারা অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করল।
শিল্প পুলিশ জানিয়েছে, সাভার-আশুলিয়া ও ধামরাই এলাকায় ১ হাজার ৭৯২টি পোশাক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে যেসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলো ছাড়া বাকি কারখানায় উৎপাদন চলছে। বেলা ১১টা পর্যন্ত কোনো ধরনের সড়ক অবরোধ বা বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, গত বুধবার ও বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজকের পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো আছে। শান্তিপূর্ণভাবে কাজ চলছে বেশিরভাগ কারখানায়। তবে ১৩০টি পোশাক কারখানা শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। বাকি কারখানাগুলোতে কাজ চলছে। তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এবং অব্যাহত থাকবে।
এনজে