ভারতে চলতি ২০২৩-২৪ বিপণনবর্ষে চিনি উৎপাদনের পরিমাণ ৮ শতাংশ কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসএমএ)। গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ বিপণনবর্ষে ভোগ্যপণ্যটির উৎপাদন দাঁড়াতে পারে প্রায় ৩ কোটি ৩৭ লাখ টনে। সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে আইএসএমএ। উৎপাদন কমার কারণ হিসেবে দেশটির প্রধান আখ উৎপাদনকারী রাজ্যগুলোতে কম বৃষ্টিপাতকে দায়ী করেছে সংগঠনটি। খবর রয়টার্স।
বর্তমানে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি উৎপাদনকারী। বর্তমানে দেশটি আন্তর্জাতিক বাজারে কোটার ভিত্তিতে চিনি রফতানি করে থাকে। চলতি মৌসুমে উৎপাদন কমে গেলে অভ্যন্তরীণ চাহিদার কথা মাথায় রেখে রফতানি বন্ধ রাখতে পারে ভারত। এতে ভোগ্যপণ্যটির বৈশ্বিক সরবরাহ হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে চিনির দাম গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে অবস্থান করছে। ভারত চিনি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে পণ্যটির দাম আরো বেড়ে যেতে পারে।
আইএসএমএ গত আগস্টে ২০২৩-২৪ মৌসুমে ৩ কোটি ৬২ লাখ টন চিনি উৎপাদনের প্রাথমিক পূর্বাভাস দিয়েছিল। সম্প্রতি ওই পূর্বাভাস সংশোধন করে বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি। সংশোধিত পূর্বাভাসে আইএসএমএ বলছে, চলতি বছর (২০২৩-২৪) চিনির উৎপাদন নামতে পারে ৩ কোটি ৩৭ লাখ টনে। সংগঠনটির প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর (২০২২-২৩) ৩ কোটি ৬৬ লাখ টন চিনি উৎপাদন করেছিল ভারত। এ হিসেবে চলতি মৌসুমে পণ্যটির উৎপাদন পূর্বাভাস কমেছে ২৯ লাখ টন।
তবে এ বছরের উৎপাদন পূর্বাভাসে ইথানল তৈরির তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। দেশটির সরকার এখনো ইথানলের বার্ষিক ক্রয়মূল্য ঘোষণা করেনি। দাম ঘোষণার পর চিনি থেকে ইথানল তৈরির পূর্বাভাস জানাবে আইএসএমএ। কেননা ইথানলের দাম চিনি রফতানির পরিমাণকে প্রভাবিত করে।
মুম্বাইভিত্তিক একটি গ্লোবাল ট্রেড হাউজের ডিলার বলেছেন, ‘চিনিকলগুলো গত বিপণন বছরে ইথানল উৎপাদনের জন্য ৪১ লাখ টন চিনি সরিয়ে রেখেছিল। এ বছর ইথানল তৈরিতে একই পরিমাণ চিনি ব্যবহার করা হলে নিট চিনি উৎপাদন নামতে পারে ২ কোটি ৯৬ লাখ টনে।’
এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে এখনো শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে। চিনি রফতানি করার মতো উদ্বৃত্ত থাকবে বলে মনে হচ্ছে না। তাই সরকারও চিনি রফতানি অনুমতি দেবে না।’
২০২১-২২ মৌসুমে ভারত রেকর্ড ১ কোটি ১১ লাখ টন চিনি রফতানি করেছিল। কিন্তু ফলন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কায় অভ্যন্তরীণ বাজারে ভোগ্যপণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত আগস্টে অক্টোবর পর্যন্ত চিনি রফতানি নিষিদ্ধ করে ভারত। ফলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া মৌসুমে (২০২২-২৩) দেশটি মাত্র ৬২ লাখ টন চিনি রফতানি করতে পেরেছিল। অক্টোবরে এসেও পণ্যটির রফতানি বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেনি ভারত। গত সাত বছরের মধ্যে চিনি রফতানিতে এবারই প্রথমবারের মতো নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নয়াদিল্লি।
এনজে