স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশে পানি সহজলভ্য হলেও পানির সঠিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করা না গেলে ভবিষ্যতে পানি সংকট গভীরতর হবে। আমাদের বিভিন্ন নদীর নাব্যতা হ্রাস পাচ্ছে কারণ উজানের দেশ তাদের নিজেদের প্রয়োজনে পানির প্রাকৃতিক প্রবাহকে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ঘুরিয়ে দিচ্ছে ফলে ভাটির দেশ হিসাবে আমাদের এখানে পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের লোকসংখ্যা বেড়েছে, নগরায়ন হচ্ছে ফলে পানির চাহিদাও ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক ঢাকা শহরের পানি সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার জন্য মহাপরিকল্পনার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এ পরিকল্পনা কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকায় একটি অভিজাত হোটেলে ঢাকা ওয়াসা আয়োজিত "ইনসেপশন ওয়ার্কশপ আপডেটিং দ্যা ওয়াটার সাপ্লাই মাস্টারপ্ল্যান ফর ঢাকা সিটি" শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিন এ খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডঃ সুজিত কুমার বালা।
পানির মত অতি আবশ্যকীয় একটি সেবাতে ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে আমার দ্বিমত নেই কিন্তু কাকে ভর্তুকি দিচ্ছি কিংবা সে ভর্তুকি পাওয়ার যোগ্য কিনা এই বিষয়টা বিবেচনায় আমাদেরকে নিতে হবে। ঢাকা শহরের আর্থিকভাবে সচ্ছল মানুষদের এলাকার পানির বিল আর মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের বসতির এলাকায় পানির বিল একই হওয়া উচিত নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রের তাকেই ভর্তুকি দেওয়া উচিত যার সেই আর্থিক সক্ষমতা নেই।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ কিংবা ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যানের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো লক্ষ্য অর্জনের পূর্বে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তার জন্য কাজ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা ওয়াসা ঢাকা শহরের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহের মহাপরিকল্পনা করছে যা অত্যন্ত আনন্দের। এই পরিকল্পনা থেকে এমন অনেক বিষয় ও সমস্যা বের হয়ে আসবে যাতে ভবিষ্যতে ঢাকা শহরের পানির চাহিদার যোগান দেওয়া সম্ভব হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ভবিষ্যতে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা যদি সত্যি হয় তাহলে ঢাকা শহরে পানির চাহিদা আরো বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মোকাবেলা করে আমাদেরকে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
এএ