অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭ গোলে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক আপডেট: ২০২৩-১১-১৬ ১৭:৫২:১৩
র্যাঙ্কিংয়ে ব্যবধানটা ১৫৬। নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াই চালিয়ে কতদূর যেতে পারবে বাংলাদেশ? কাবরেরার ডিফেন্সিভ ফর্মেশন, গোলবারে মিতুল মারমার পেনাল্টি সেভ, তারপরও ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে জামালরা।
মেলবোর্নে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। জেমি ম্যাকলারেন, মিচেল ডিউকদের গোল উৎসবে এদিন নাস্তানাবুদ হয়েছে জামালরা। হ্যাটট্রিক করেছেন ম্যাকলারেন। জোড়া গোল ডিউকের আর একটি করে গোল করেছেন হ্যারি সোউত্তর ও ব্রান্ডন বোরেলো।
র্যাঙ্কিং কিংবা শক্তিমত্তা সব দিক থেকেই পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবুও আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে মাঠে নেমেছিল জামালরা। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে কোনো প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি কাবরেরার শিষ্যরা। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেও আটকানো যায়নি সকারুদের গোল উৎসব।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ২৭তম দলটি বাংলাদেশের জালে প্রথম আঘাত হানে ম্যাচ শুরুর ৪ মিনিটেই। ডি-বক্সের কাছে অস্ট্রেলিয়ার এক ফুটবলারকে ফাউল করে বসেন মোহাম্মদ রিদয়। রেফারির বাঁশিতে ফ্রি-কিকের সুর। ফ্রি-কিক নেন ফরোয়ার্ড ক্রেইগ গুডউইন। গোলবারের সামনে ক্রস পেয়ে হেডে বল জালে জড়ান হ্যারি সোউত্তার। সাড়ে ৬ ফিট উচ্চতার এ ডিফেন্ডারকে বাধা দেয়ার কোনো সুযোগই পাননি বাংলাদেশের ডিফেন্ডার বা গোলরক্ষক। তার উচ্চতার কাছেই হেরে গেছে কাবরেরার রক্ষণভাগ।
১১ মিনিটে দারুণ দক্ষতায় বল ক্লিয়ার করেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক মিতুল মারমা। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে গেলেও ২০ মিনিটে আরও একটি গোল হজম করতে হয় কাবরেরার শিষ্যদের। ডানপ্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠে মিলার পাস দেন মেটকালফেকে। তিনি এগিয়ে গিয়ে ডি-বক্সে ক্রস নেন। রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়ান বোরেলো। ২৭তম মিনিটে গুডউইনের ক্রস গোলবারের সামনে থেকে হেড নিয়েছিলেন বোরেলো। তবে সতর্ক মিতুল মারমা সেটি গ্লাভসবন্দী করে হতাশ করেন এ ডিফেন্ডারকে।
কিন্তু ৩৮ মিনিটে সে সুযোগটি পাননি মিতুল। ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে মেটকালফের আলতো ক্রস ছয় গজ দূরত্ব থেকে হেডে জালে জড়ান ডিউক। বাংলাদেশের চার ডিফেন্ডার তাকে ঘিরে রাখলেও উচ্চতার কারণে তার থেকে বল ক্লিয়ার করতে পারেনি। দুই মিনিট পর চতুর্থ গোলটি হজম করে বসে জামালরা। ডি-বক্স থেকে হেডে বল ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন বাংলাদেশের ডিফেন্ডার হাসান মুরাদ। কিন্তু সেটি পেয়ে যান বক্সের বাইরে থাকা বোরেলো। তার শট বারে লেগে ফিরে আসার সময় ছয় গজ দূরত্বে পেয়ে যান ডিউক। আগের শট ফেরাতে একপাশে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন মিতুল। তাতে জাল ফাঁকা পেয়ে আলতো ছোঁয়ায় বল জড়ান ডিউক। ৪-০ ব্যবধানের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় অস্ট্রেলিয়া।
বিরতি থেকে ফিরে জামালদের রক্ষণে আরও চাপ বাড়ায় সকারুরা। বদলি হয়ে নামা ম্যাকলারেন মাঠে নামার দুই মিনিটের মধ্যে গোলের দেখা পান। ৪৮ মিনিটে বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠে গোলবারের সামনে পাস দেন জর্ডান বস। ঝাপিয়ে পড়েও গ্লাভসবন্দী করতে ব্যর্থ হন মিতুল। আলতো ছোঁয়ায় জালে জড়ান সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ম্যাকলারেন। ২২ মিনিট পর ব্যক্তিগত দ্বিতীয় গোলের দেখা পান ম্যাকলারেন। ডি-বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে ম্যাসিমো লুঙ্গোর জোরালো শট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মিতুল। কিন্তু পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি। এগিয়ে এসে ফাঁকায় বল পেয়ে জালে জড়ান ম্যাকলারেন।
৮৪তম মিনিটে হ্যাটট্রিক তুলে নেন এ স্ট্রাইকার। মিলারের ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে গোল ব্যবধান ৭-০ করেন তিনি। পাঁচ মিনিট পর ব্যবধানটা ৮-০ করার সুযোগ পেয়েছিল সকারুরা। কিন্তু গোলবারে ১৯ বছর বয়সী মিতুলের নৈপুণ্য রক্ষা পায় বাংলাদেশ। ডি-বক্সে এইডেন ও,নেইলকে ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেন সোহেল। কিন্তু সেটি কাজে লাগাতে পারেননি লুঙ্গো। তার স্পট কিক বাঁ দিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন মিতুল। পুরো ম্যাচে ৭০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে ২৯ শট নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। গোলমুখে ১৪ শট রেখে শেষ পর্যন্ত ৭-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। বিপরীতে ৩০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে মাত্র ১টি শট নিতে পেরেছিল জামালরা।
এ নিয়ে তিন বারের দেখায় সকারুদের বিপক্ষে সবকটিতে হারলো লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ২১ নভেম্বর ঘরের মাঠে লেবাননের বিপক্ষে।
এএ