বাংলাদেশের সাফল্যের কথা শুনে সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘যেখানে যাই, কথা বলি সারা পৃথিবীর মানুষই আমাদের প্রশংসা করে। সবাই আমাদের কথা শুনতে চায়। বাংলাদেশের সফলতার কথা যখন আমরা বলি, সবাই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। তারা বিস্ময় প্রকাশ করে, কীভাবে বাংলাদেশের এত সাফল্য।’
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেট কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষির অবদান জিডিপিতে কমে যাচ্ছে। কিন্তু কৃষির গুরুত্ব তো কমছে না। কারণ, কৃষির মাধ্যমে ১৭ কোটি মানুষের চাহিদা আমাদের মেটাতে হবে। জমি কমছে, পানির উৎসও কমে যাচ্ছে। বর্ধিত জনসংখ্যার খাবার জোগাড় করা কত বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ আগে খাবার পেত না, ভাত পেত না। দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে বারবার। ২০০৪-০৫ সালে উত্তরাঞ্চলে আমি দেখেছি মানুষের হাড্ডিসার চেহারা। এখন মানুষ দুই বেলা খেতে পারে। ২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় পুষ্টিজাতীয় খাবারের বিষয়ে জোর দিয়েছিলাম। পুষ্টিকর খাবার শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, মাছ, মাংস। এর মূল সোর্স কৃষি। এর পেছনে রয়েছে মাটি। মাটি হচ্ছে জীবন। মাটির ব্যবস্থাপনা কত গুরুত্বপূর্ণ এটা বুঝতে হবে। মাটিকে গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে হবে।’
নির্বাচনের বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সামনে নির্বাচন আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। দেশটায় শান্তি দরকার, উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। আপনারা জানেন, বিএনপি একটা বড় রাজনৈতিক দল। আমরা তাদের বারবার বলেছি, আপনারা নির্বাচনে আসেন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করেছেন। একসঙ্গে বসে আলোচনার কথা বলেছেন। সেটাতে তিনি রাজি হননি, তিনি গেছেন সন্ত্রাসের পথে। গাড়িতে আগুন দিলেন, রেললাইন উপড়ে ফেললেন। নির্বাচন কেন্দ্রে স্কুলে আগুন দিলেন। সারা দেশে সহিংসতা করলেন। ২০১৫ সালে তিন মাস একটানা হরতাল অবরোধ করলেন। তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সরকার পতন ছাড়া তিনি ঘরে ফিরবেন না, পরে ব্যর্থতার কালিমা লেপে তিনি ঘরে ফিরলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো গণভবনে আছেন এবং অত্যন্ত সফলভাবে দেশ পরিচালনা করছেন এবং তা সারা পৃথিবীতে সমাদৃত হয়েছে। জাতিকে একটা নতুন উচ্চতায় তিনি নিয়ে গেছেন, সম্মান ও গৌরবের দিক থেকে।’
অনুষ্ঠানে কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে রেখে যাওয়ার জন্য মাটি ও পানির গুরুত্ব অপরিসীম। পানি ও মৃত্তিকা সম্পদের অত্যধিক ব্যবহারের কারণে পানি ও মাটি আজ অবক্ষয়ের সম্মুখীন। ভূমির যথাযথ ব্যবহার ও মাটির অবক্ষয় রোধ নিশ্চিত করার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয় অঙ্গীকারবদ্ধ।
কৃষি গবেষণা কাউন্সিল চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, ‘খাদ্যনিরাপত্তার জন্য মাটির বিকল্প নেই। তাই মাটির স্বাস্থ্য ভালো রাখা জরুরি। মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকলে, আমাদের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।’
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী মৃত্তিকা দিবস অ্যাওয়ার্ড, মৃত্তিকা যত্ন অ্যাওয়ার্ড ও মৃত্তিকা অলিম্পিয়াডে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করেন।
এএ