দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সাগরের তলদেশে স্থাপিত পাইপলাইন দিয়ে ডিজেল পরিবহন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ৪৮ মিনিটে গভীর সাগরে অপেক্ষমাণ মাদার ভেসেল এমটি জেগ অপর্ণা থেকে ডিজেল পাম্প করা শুরু হয়।
ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ লোকমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জাহাজটি থেকে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল পাম্প করা হবে। দুইদিনের মধ্যেই ডিজেলবাহী এই মাদার ভেসেল থেকে তেল খালাস শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত ৩০ নভেম্বর 'সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইনের' একটি পাইপ দিয়ে প্রায় ৮২ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত (ক্রুড) তেল পাম্পিং শুরু হয়। এই দুটি পাইপলাইন দিয়ে জ্বালানি তেল পরিবহনের মাধ্যমে এসপিএম প্রকল্পটির কমিশনিং হলো।
ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান বলেন, গত ৩০ নভেম্বরে ক্রুড অয়েলের পাইপলাইন কমিশনিং হয়েছে। আর আজকে ডিজেলের পাইপলাইনের কমিশনিং হলো।
ইস্টার্ন রিফাইনারির কর্মকর্তারা জানান, সাগরে ভাসমান এই মুরিং থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে মঙ্গলবার দুপুর থেকে ডিজেল পরিবহন শুরু হয়েছে। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপকূল থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার গভীর সাগরে স্থাপন করা হয়েছে এসপিএম।
কর্মকর্তারা আরও জানান, পরবর্তীতে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনাল থেকে পাম্প করে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পাঠানো হবে ডিজেল। এই অংশটিতে স্থাপন করা হয়েছে ৯৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দুটি পাইপলাইন। এই পাইপলাইনগুলোর ব্যাস ১৮ ইঞ্চি।
মূলত পরিশোধিত ডিজেল এবং ক্রুড অয়েল পরিবহন করা হবে এই পাইপলাইন দিয়ে।
ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ লোকমান বলেন, বিভিন্ন টেকনিক্যাল পরীক্ষা শেষে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে ক্রুড অয়েল পৌঁছাতে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সময় লাগতে পারে।
দেশের জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য এই পাইপলাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটি প্রায় ১১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের (দুটি পাইপলাইন)। এর মধ্যে ৭৪ কিলোমিটার লম্বা দুটি পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে সাগরের তলদেশে।
এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৭ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। এতে অর্থায়ন করেছে বিপিসি, বাংলাদেশ সরকার ও চাইনিজ এক্সিম ব্যাংক।
প্রকল্পের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে বঙ্গোপসাগরের বহিঃনোঙ্গর থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারি পর্যন্ত লাইটার জাহাজের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহন কমে যাবে। এতে করে প্রতিবছর সাশ্রয় হবে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।
এএ