চাঁদ দেখা গেল আর দুই দিন বাদেই ঈদ। ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উৎসব। আর এই উৎসব আনন্দে হাজারটা কাজের মাঝেও নিজেকে একটু পরিপাটি আর আকর্ষণীয় করে সাজিয়ে রাখতে মন সবারই চায়। এজন্য দরকার একটু বাড়তি সচেতনতা। ঈদের দিনের পোশাকটি কেমন হবে। সেই সঙ্গে সাজবেনই বা কেমন। দিনের পোশাকের সঙ্গে রাতের পোশাক ও সাজের বৈচিত্র্য কেমন হবে। ঈদের পরদিন কী পরবেন। সেইদিন সাজবেনই বা কেমন। এতসব জল্পনা কল্পনা ভিড় করে মনের মাঝে।
ঈদের দিনে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর গোসলটা সেরে নিলে সারাদিনের জন্য টেনশনমুক্ত থাকা যায়। এরপর নতুন পোশাক পরে দিনের শুরু।
কেমন হবে ঈদের দিনের পোশাক:
ঈদের দিন একটু আরামদায়ক পোশাক পরিধান করাই ভালো। এক্ষেত্রে হালকা সুতি হলে বেশি ভালো হয়। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া, জিন্স যেটাই হোক তার সঙ্গে ম্যাচিং করে পরা যায় দুটি চুড়ি, পায়ে দুই ফিতার চটি। সবার মধ্যেই খুশিখুশি ভাবটা থাকে তাই সাজগোজের ব্যাপারটিও এ সময় বেশি প্রাধান্য পায়। তবে এ দিন শিফন, জর্জেট, সুতি, ঢাকাই জামদানি, মসলিন, টাঙ্গাইলের জামদানি কাপড়গুলোও পরতে পারেন। কারণ এ গুলো হালকা হওয়ায় খুব আরামদায়ক হবে।
সুন্দর লুকে নিজেকে উপস্থাপন:
ঈদের দিনে এতো কাজের ভিড়েও নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন করতে হলে একটু সচেতন হতেই হয়। আগে ঈদের দিনে সাজটাকে তিন ভাগে ভাগ করে নিন। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করুন সকাল, দুপুর ও রাতের সাজ এবং পোশাক কী হবে।
সকালের সাজ:
সকালে একটু-আধটু কাজের চাপ থাকে, তাই চলাফেরা করতে সহজ হয় এমন কোনো পোশাক বেছে নিন। সকালের আবহাওয়ার সাঙ্গে মানানসই কোন হালকা কালারের পোশাক পরতে পারেন।মেকাপের শুরুতে অবশ্যই ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর টোনার ও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে স্কিন টোনের সঙ্গে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন দিয়ে পাউডার ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। সকাল বেলায় ভারি মেকাপ না নেওয়ায় ভালো। এসময় চোখে কাজল পরতে চাইলে কালো না পরে ব্রাউন কালার বেছে নিতে পারেন ।
এছাড়া সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে কেমন সাজ নেবেন এ প্রসঙ্গে বিউটি এক্সপার্ট শারমিন আখতার বলেন, সকালে সুতির সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে সাজটা একেবারে শুভ্র ও ন্যাচারাল হবে। চোখে কাজল এবং ঠোঁটে ন্যাচারাল কালারের লিপিস্টিক লাগিয়ে নিলে চেহারায় সকালের শুভ্রতার একটা প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। চুলটা এ সময় বাঁধা থাকবে।
দুপুরের সাজ:
ঈদের দিন দুপুরে বাড়িতেই থাকার চেষ্টা করুন। দুপুরে হালকারঙ এর পোশাক বেছে নিন। আর সাজের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশনের সঙ্গে পাউডার মেখে হালকা করে ব্লাশন বুলিয়ে নিন দুই গালে। আর দিতে পারেন লিপগ্লোস। চোখের সাজে ভিন্নতা আনতে স্যাডো আর আইলাইনার দিন। পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কানে আর গলায় ছোট গয়না পরুন।
দুপুরে আইশ্যাডোর রঙ সঙ্গে ম্যাচ করতে পারেন, আবার কন্ট্র্যাস্টও করতে পারেন।চোখের পুরোটা পাতায় বেজ কালার করে নিন। তারপর অন্য কালারগুলো লাগান। চোখের লেশের কোল ঘেঁষে পেন্সিল আইলানারের টান আবার আউটার কর্নারটাও একটু টেনে দিতে পারেন। গালে আলতো করে একটু ব্লাশন ছুঁইয়ে নিন। লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে লিপিস্টিক লাগিয়ে নিন।
রাতের সাজ:
রাতে আপনি আপনার ইচ্ছেমতো সাজুন। বাইরে গেলে শাড়ি পরুন। বাঙ্গালি নারীর শাড়িতেই পূর্ণ সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। মুখ, গলায় ফাউন্ডেশন কমপ্যাক্ট পাউডার দিন। সাজ বেশি সময় স্থায়ী করতে স্পঞ্জ পানিতে ভিজিয়ে মুখে চেপে মেকাপ বসিয়ে নিন। চোখে মাশকারা, আইলাইনার এবং গাঢ় রঙ এর স্যাডো ব্যবহার করুন।
রাতের সাজে শাড়ি খুব বেশি গর্জিয়াস হলে মেকাপটা পরিচ্ছন্ন ও উজ্জ্বল হবে। চোখের ওপরে অ্যাকোয়া ব্লু এবং গ্রে আইশ্যাডো একসঙ্গে মিলিয়ে লাগান। চোখের ইনার কর্নারে গোল্ড বা শিমারি পিঙ্ক আইশ্যাডো স্মাজ করে লাগিয়ে নিন। তবে ব্লাশনের রঙ বেশি উজ্জ্বল না হওয়াই ভালো। হালাকা রঙে লিপিস্টিক রাতের সাজের জন্য বেশি মানানসই হবে।