সুশাসন না থাকলে বন্ডের ক্ষেত্রে কোন গ্যারান্টি কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহাম্মাদ হাসান বাবু। তিনি বলেন, আমাদের সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আশা করি সরকার মার্চেন্ট ব্যাংক, ইন্সুরেন্স, রেগুলেটরি বডির সাথে আলোচনা করে বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন করবে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ডিএসই টাওয়ারের ডিএসই লাউঞ্জে “লং টার্ম ফাইন্যান্সিং: এ ক্রিটিকাল এসেসমেন্ট অফ বন্ড মার্কেট ইন বাংলাদেশ এন্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড” শীর্ষক ফোকাস গ্রুপ মিটিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহাম্মাদ হাসান বাবুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম. সাইফুর রহমান মজুমদার, এফসিএ, এফসিএমএ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি, মার্চেন্ট ব্যাংক, আইসিবি, আইসিএবি, আইসিএমএবি, ডিবিএ ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহন করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান, সিপিএ। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের আজকের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সময়পোযোগী। আমাদের বন্ড মার্কেটটি অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। বর্তমানে ডিএসইতে মাত্র ১৩ টি কর্পোরেট বন্ড আছে। এই বিষয়টি এখনো জনপ্রিয় করতে পারেনি। এখানে উন্নয়নের অনেক সুযোগ রয়েছে। আমরা দেখেছি বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করছে। মিনিসিপাল বন্ড থেকে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে অর্থের যোগান দেয়া হয় এবং বাজেট উন্নয়নেও সহায়তা করতে পারে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএম এর অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জী। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদী ঋণের প্রয়োজনীয়তা, বর্তমান দীর্ঘ মেয়াদী অর্থায়নের উৎসসমূহ, ইক্যুইটি ও বন্ড মার্কেটের বর্তমান অবস্থা, বাংলাদেশ ও পাশবর্তী দেশগুলোর আর্থিক কাঠামো, বাংলাদেশ ও পাশবর্তী দেশগুলোর বন্ড মার্কেটের আকার, বাংলাদেশের জিডিপি অনুপাতে সরকারী ও কর্পোরেট বন্ডের হার, বাংলাদেশে সরকারী বন্ড এবং বন্ডের ক্লিয়ারিং এবং সেটেলমেন্ট সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তাগন বন্ড মার্কেটের প্রয়োজনীয়তা, সুযোগ সুবিধা, বাধাসমূহ, বন্ডের চাহিদা ও যোগান বৃদ্ধির জন্য করণীয়, আইনকানুনসমূহের প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং বন্ড মার্কেটের আর্ন্তজাতিক সর্বোত্তম অনুশীলন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএসইসি’র কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম বলেন, যদি আমরা সবাই মিলে যদি চিন্তা করি বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করবো তাহলে বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করা সম্ভব। আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছি। আমাদের পুঁজিবাজারের ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য বিএসইসি সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এজন্য প্রয়োজনীয় আইনগুলো সংস্কার করা হয়েছে। বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের জন্য আমাদের লক্ষ্য ও টাইমফ্রেম নির্ধারণ করে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহাম্মাদ হাসান বাবু সমাপনী বক্তেব্যে বলেন, বাংলাদেশে বন্ড মার্কেট চালু রয়েছে অনেক দিন হয়ে গেছে। আমরা সেই অনুযায়ী উন্নতি করতে পারিনি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উন্নতি করতে হলে অবকাঠামো খাতে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। এর মধ্যে ২০০ বিলিয়ন ডলারের এখনও সংস্থান হয়নি। আর এটি আমরা বন্ড মার্কেটের মাধ্যমে করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদে অর্থায়ন করতে হবে। আর এজন্য পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করতে হবে। আর বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের জন্য আমাদের একটি রোড ম্যাপ ও একটি ইম্পলিমেন্টেশন প্ল্যান প্রয়োজন। এছাড়াও তিনি রেগুলেটরি অথরিটির মধ্যে সমন্বয়ের জন্য আলোচনার গুরুত্বারোপ করেন।
এএ