বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশ আসে পোশাক শিল্পখাত থেকে। তবে, দেশের পোশাকের বাজার যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ কেন্দ্রিক। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপ-আমেরিকার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নতুন বা অপ্রচলিত বাজারের দিকে ঝুঁকছেন উদ্যোক্তারা। অতিনির্ভরতা এড়াতে অপ্রচলিত বাজার সম্প্রসারণে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। সরকারের পক্ষ থেকেও রপ্তানিতে ৪ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পোশাকের অপ্রচলিত বাজার।
এ বিষয়ে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানির গতিও ধারাবাহিক। বৈশ্বিক নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও বাড়ছে রপ্তানি। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বেড়েছে অন্যসব বাজারের তুলনায়। রপ্তানিকারকদের আস্থাও বাড়ছে এসব দেশে। উদ্যোক্তাদের নানা উদ্যোগ ও রপ্তানিতে সরকারের নগদ সহায়তা অপ্রচলিত বাজার সম্প্রসারণে উৎসাহ জোগাচ্ছে।
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ বলছে, বর্তমানে দেশের প্রচলিত ও প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। এসব বাজারে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বেশি। এসব বাজারের বাইরের দেশগুলোকে অপ্রচলিত বা নতুন বাজার হিসেবে দেখা হয়। অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, চীন, রাশিয়া, আরব আমিরাত, কোরিয়া ও ভারতে রপ্তানি বেশি।
চীন অনেক বাজার থেকে সরে এসেছে। তারা নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে কিছু বাজার থেকে। বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা সেসব বাজারে আস্থা অর্জন করছে। জাপান থেকে সরে গেছে চীন। সেখানে যে গ্যাপ তৈরি হয়েছে সেটা পূরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এভাবে সুযোগ তৈরি হয়েছে অপ্রচলিত বাজারে। রপ্তানিও বাড়ছে, আগামীতে আরও বাড়বে।
বিজিএমইএ ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, অর্থবছরের তিন মাসে অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি গত অর্থবছরের (২০২২-২৩) একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। এসময়ে রপ্তানির পরিমাণ ২২৪ কোটি ২৪ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে একক দেশ হিসেবে দেশের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে দুই দশমিক ৭৭ শতাংশ। আর জোটগতভাবে প্রধান বাজার ইইউতে (২৭ দেশ) রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সে হিসাবে ধারাবাহিকভাবে তুলনামূলকভাবে রপ্তানি বাড়ছে নতুন বাজারে।
এনজে