সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তারও বেশি কাজ করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩৩ শতাংশ বেড়ে যায়। আর হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে ১৩ শতাংশ। সম্প্রতি নয়া এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজ করেন তাদের তুলনায় যারা ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় কাজ করেন তাদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি এক-তৃতীয়াংশ বেশি। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার ৬ লাখেরও বেশি মানুষের ওপর গবেষণা চালিয়ে গবেষণা পত্রটি তৈরি করা হয়েছে।
বেশি সময় ধরে কাজ করা শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ- এ বিষয়টি আগে থেকেই জানা থাকলেও এবারের গবেষণায় কাজের সময়ের সঙ্গে হৃদরোগের সম্পর্ক নিয়ে সুনির্দিষ্ট উপসংহার টানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, যে যত বেশি সময় কাজ করবে তার স্ট্রোক এবং হার্ট এটাকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকবে।
আগের গবেষণাগুলিতে দীর্ঘক্ষণ কাজের সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কার কথা বলা হলেও স্ট্রোকের বিষয়টি আসেনি। এবারের গবেষণায় সেটি উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন সুইডেনের ইউমা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রফেসর ডক্টর আরবান জেনলার্ট।
প্রায় ৫ লাখ ২৮ হাজারেরও বেশি মহিলা ও পুরুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, যারা সপ্তাহে ৪১ থেকে ৪৮ ঘণ্টা কাজ করেন, তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা স্বাভাবিক জীবনযাপন করা মানুষদের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। আর এ হিসাবটাই দ্বিগুণের বেশি হয়ে যায় সপ্তাহে ৪৯ থেকে ৫৪ ঘণ্টা কাজ করা মানুষদের ক্ষেত্রে। তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি একলাফে বেড়ে যায় ২৭ শতাংশ। আর ৫৫ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় কাজ করলে এ ঝুঁকি দাঁড়ায় ৩৩ শতাংশে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি সময় ধরে কাজ করার মানে হচ্ছে, বেশিক্ষণ ধরে বসে থাকা, বেশি চাপ নেওয়া এবং শরীরের দিকে মনোযোগ কম দেওয়া। এ সমস্ত কারণেই বেশি সময় ধরে কাজ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে কেবল বেশি সময় কাজের চাপই নয়, সঙ্গে অ্যালকোহল, ধূমপান এবং অত্যধিক মানসিক চাপও স্ট্রোকের অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।