টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আগামীকাল শুরু হচ্ছে বিশ্ব মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎ সম্মিলন বিশ্ব ইজতেমার প্রথমপর্ব।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) বাদ ফজর বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমা মূল কার্যক্রম শুরু হবে। তবে এর আগেই প্রায় পুরো ইজতেমার মাঠ মুসুল্লীতে পূর্ণ হয়ে গেছে।
ইতোমধ্যে ১৬০ একরের ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। অনেকেই বিশ্ব ইজতেমার মূল ময়দানে জায়গা না পেয়ে ইজতেমার মাঠে প্রবেশপথের দুইপাশে অবস্থান নিয়েছেন।
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান, দেশ-বিদেশের লাখো মুসলিম জনতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীর। ইতোমধ্যে পুরো ময়দান পূর্ণ হয়ে গেছে। জিকির-আসকারে সময় পার করছেন মুসুল্লিরা। তাদের ধর্মীয় কাজে মনোনিবিষ্ট করতে ও ময়দানে উপস্থিত মুসুল্লীদের জমিয়ে রাখতে মুরুব্বীরা বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাদ ফজর থেকে প্রাথমিক বয়ান দিচ্ছেন।
ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. মাহফুজ জানান, বিশ্ব ইজতেমার মূল পর্ব শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বুধবার (৩১ জানুয়ারি) থেকেই দলে দলে তবলিগ মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে এসে অবস্থান নিয়েছেন। মুসল্লির দল মাঠের ভেতরে ঢুকে নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিতে শুরু করেছেন।
লাখো মুসল্লির উপস্থিতিতে ইজতেমা ময়দান প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। বাস, ট্রাক, ট্রেন ও হেঁটে টুপি-পাঞ্জাবি পরিহিত মুসল্লিরা টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে আসছেন। রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মুসল্লিদের এ আগমন অব্যাহত থাকবে।
আয়োজকরা বলছেন, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ হবে। দুপুর দেড়টার দিকে কাকরাইলের মুরুব্বি মাওলানা জোবায়ের এ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন। বৃহত্তম জুমার এ নামাজে অংশ নিতে প্রতি ইজতেমায় তবলিগের মুসল্লি ছাড়াও গাজীপুর ও আশপাশের জেলা থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিতে থাকেন।
১৬০ একরের পুরো ইজতেমা ময়দান ছাপিয়ে কামারপাড়া, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের অলিগলিতেও কাতারবদ্ধ হয়ে জুমার নামাজে অংশ নেবেন মুসল্লিরা। ময়দানের পশ্চিমে তুরাগ নদের পূর্ব পাশে নামাজের মিম্বর এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে বিদেশি মুসল্লিদের কামড়ার পাশে বয়ান মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। নামাজের মিম্বর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমাম এবং বয়ানের মঞ্চে বয়ানকারী অবস্থান করেন। বয়ান মঞ্চ থেকে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করা হবে।
প্রায় ১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের মাঠটিতে বাঁশের খুঁটির ওপর ছাউনির মধ্যে মুসল্লিদের বয়ান শোনার জন্য লাগানো হয়েছে বিশেষ ছাতা মাইক। লাগানো হয়েছে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতি। দেশীয় তবলিগের মুসল্লিদের জন্য জেলাওয়ারি আলাদা খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে।
বিদেশি তবলিগ অনুসারী মুসল্লিদের জন্য মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে আধুনিক সুবিধাসংবলিত আলাদা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে, তাবলিগ জামাতের নিজেদের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ফেব্রুয়ারির ৯, ১০ ও ১১ তারিখে। সে হিসেবে এখন যারা মাঠে আছেন বা আসছেন তারা সবাই মাওলানা জুবায়েরপন্থী। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে জুবায়ের পন্থীদের ইজতেমা।
বিএইচ