চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার জেরে মালদ্বীপ বিমুখ ভারতীয়রা। নিজ দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অপমানের জবাব বেশ ভালোভাবেই দিচ্ছেন দেশটির ভ্রমণপিপাসুরা। মালদ্বীপের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশটিতে ভ্রমণে শীর্ষে থাকা ভারতের অবস্থান এখন পঞ্চম।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসেও মালদ্বীপে পর্যটকদের হিসেবে ভারত ছিল শীর্ষস্থানে, তবে ২০২৪-এর জানুয়ারির শেষে এসে সেই অবস্থা পঞ্চম স্থানে এসে দাঁড়িয়েছে।
মালদ্বীপের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, তিন সপ্তাহ আগেও মালদ্বীপে ভারতীয়দের ঘুরতে যাওয়ার যে হিড়িক ছিল, বর্তমানে সেই জোয়ারে টান পড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারণেই এই পতন।
মালদ্বীপের সরকারি তথ্য অনুসারে, দেশটিতে ভ্রমণে এখন শীর্ষে উঠেছে রাশিয়া। গত তিন সপ্তাহে রাশিয়া থেকে মালদ্বীপে ১৮ হাজার ৫৬১ জন পর্যটক গিয়েছেন। তার পরেই আছে ইতালি। মালদ্বীপে আসা ১৮ হাজার ১১১ জন পর্যটক ইতালি থেকে গিয়েছেন। তিন এবং চারে আছে যথাক্রমে চীন (১৬ হাজার ৫২৯ জন) এবং যুক্তরাজ্য (১৪ হাজার ৫৮৮ জন)।
২০২৩ সালে দেশটিতে ভ্রমণে শীর্ষে থাকা ভারতের অবস্থান এখন পঞ্চম। দেশটিতে গত তিন সপ্তাহে ১৩ হাজার ৯৮৯ জন পর্যটক গিয়েছেন। যদিও গত বছরে এমন অবস্থা ছিল না। সে বছর মোট ২ লাখ ৯ হাজার ১৯৮ জন ভারতীয় পর্যটক মালদ্বীপে গিয়েছেন। যা মালদ্বীপের পর্যটন বাজারের ১১ শতাংশ।
এছাড়া তালিকায় ছয় থেকে দশের মধ্যে আছে যথাক্রমে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, পোল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ড।
চলতি মাসের শুরুর দিকে লাক্ষ্মাদ্বীপ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উপহাস করে মালদ্বীপের তিন মন্ত্রীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া পোস্টের জেরে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয় দুই দেশের সম্পর্কে। তার পরই শুরু হয় ‘মালদ্বীপ বয়কট’-এর ডাক। আর এতেই মালদ্বীপে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা কমেছে উল্লেখ যোগ্য হারে।
এদিকে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর বিরুদ্ধে সংসদে অভিশংসন প্রস্তাব আনছেন বিরোধীরা। মালদ্বীপের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল মালদ্বীভিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এমডিপি) সংসদ সদস্যরা দেশটির প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব জমা দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন।
মালদ্বীপের ইংরেজি দৈনিক দ্য সানের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এরআগে চীনা জাহাজ নোঙর করতে দেয়ায় বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। এক বিবৃতিতে সতর্কবার্তা দিয়ে মালদ্বীভিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এমডিপি ও ডেমোক্র্যাট পার্টি জানিয়েছিল, চীনা জাহাজ মালেতে নোঙর করতে দেয়ার অনুমতিতে হিতে বিপরীত হতে পারে। সরকারের ভারতবিরোধী অবস্থানের কারণে উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দ্বীপরাষ্ট্রটির।
এমডিপির একজন আইনপ্রণেতা দ্য সানকে বলেন, ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য আইনপ্রণেতাদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে এমডিপি।
মালদ্বীপে গত বছরের নভেম্বরে ক্ষমতায় এসেছেন মোহাম্মদ মুইজ্জু। তিনি ভারত বিরোধী বলে পরিচিত। ক্ষমতায় আসার পরেই তিনি মালদ্বীপ থেকে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলেন।
এএ