প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চিঠিতে বাইডেন বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে সমর্থনের পাশাপাশি একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন স্বপ্ন পূরণে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠায় ঢাকার সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা জো বাইডেনের চিঠিকে সরকার অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বলে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কোনো অস্বস্তি আছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিঠিতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানিসহ বৈশ্বিক নানা বিষয়ে একযোগে কাজ চালিয়ে যেতে তার প্রশাসনের আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ফলে এই চিঠির পর সব নিরসন হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আর কোনো অস্বস্তির কারণ নেই।
মিয়ানমার থেকে দেশটির সীমান্তরক্ষীরা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিচ্ছে -এ বিষয়ে সরকারের মনোভাব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সরকার আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছে। নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ আছে। সকালে মিয়ানমারের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের রাষ্ট্রদূতের সাথে কথা বলেছেন। তারা তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।
সীমান্ত সুরক্ষা ও এক্ষেত্রে জাতিসংঘের সহায়তা লাগবে কি না -এ প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত সুরক্ষিত আছে। প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছে। সকাল পর্যন্ত ৯৫ জন রেজিস্টার্ড হয়েছে। তারা তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তৃতীয় পক্ষ ডাকার সুযোগ নেই।
ব্রাসেলস সফর প্রসঙ্গ বেলজিয়ামে গত ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় ইইউ ইন্দো-প্যাসিফিক মিনিস্টেরিয়াল ফোরামে দেশের প্রতিনিধিত্বকারী মন্ত্রী ব্রাসেলস সফর নিয়ে বলেন, সেখানে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার হওয়ার আলোচনা হয়েছে।
ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে সুরক্ষা বিষয়ে বক্তৃতার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জোসেপ বোরেলের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়, ইইউ কমিশনার ফর ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপস ও কমিশনার ফর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট এবং ভিয়েতনাম, বেলজিয়াম, চেক, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, পর্তুগাল, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, দশটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের বিষয়ে জানান হাছান মাহমুদ।
এর আগে সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত আব্দুলমুতালিব এস সুলাইমান (Abdulmutalib S Suliman) এবং থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর (Makawadee Sumitmor)।
বৈঠকে লিবিয়ার পুণর্গঠনে বাংলাদেশ পাশে থাকবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে বাংলাদেশি ডাক্তার, নার্স, প্রকোশলী, কৃষিবিদসহ দক্ষ পেশাজীবী ও জনশক্তি এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাজের সুযোগের বিষয়ে আলাপ করেন।
থাই রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠকে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট, চট্টগ্রাম-ইয়াঙ্গুন কোস্টাল শিপিং, ঔষধ, চামড়াজাত ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি, এলএনজি আমদানি বিষয়ে আলোচনা করেন ড. হাছান।
এম জি