বিশ্ববাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে মূল্যবান ধাতু স্বর্ণের দামে। সবশেষ শুক্রবারও মূল্যবান ধাতুটির দাম কমতির দিকে ছিল। এ প্রবণতার মধ্য দিয়েই স্বর্ণের বৈশ্বিক বাজার সপ্তাহ শেষ করতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
যুক্তরাষ্ট্রে বিল, বন্ড ও নোটের মতো সরকারি ট্রেজারি সিকিউরিটিজের সুদহার বাড়ার কারণেই মূলত অব্যাহত কমছে স্বর্ণের দাম। বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্যসূচক (পিএমআই) প্রকাশের অপেক্ষায় আছেন। এ সূচকের মাধ্যমেই দেশটির বর্তমান মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী থাকলে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার বৃদ্ধির নীতি বহাল রাখবে। এর প্রভাবে আরো কমে যেতে পারে স্বর্ণের দাম।
স্পট মার্কেটে শুক্রবার স্বর্ণের দাম দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। প্রতি আউন্সের মূল্য স্থির হয়েছে ২ হাজার ২২ ডলার ৮৬ সেন্টে। সপ্তাহজুড়ে দাম কমেছে দশমিক ৮ শতাংশ। অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) একদিনের ব্যবধানে আউন্সপ্রতি দাম দশমিক ৪ শতাংশ কমে ২ হাজার ৩৮ ডলার ৭০ সেন্টে নেমেছে।
তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে শুক্রবার ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের সুদহার বেড়ে দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। অন্যদিকে দুই বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার উঠে আসে দুই মাসের সর্বোচ্চে। বিনিয়োগকারীরা এসব বন্ডের দিকেই বেশি ঝুঁকছেন। ফলে কমছে স্বর্ণের চাহিদা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় গোল্ড রিটেইলার গেইন্সভাইল কয়েন্সের প্রধান বাজার বিশ্লেষক এভারেট মিলম্যান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ শিগগিরই সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নেবে না। আর এক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য শীর্ষ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভকেই অনুসরণ করবে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি স্বর্ণের দামে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিলেও ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বছরজুড়ে ধাতুটির বাজারদর থাকবে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায়। ডব্লিউজিসির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা বেড়ে রেকর্ড উচ্চতা পৌঁছেছে। অব্যাহত ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা এবং চীনে দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ওই বছর বিনিয়োগকারীদের কাছে ধাতুটির কদর ছিল অনেক বেশি। চলতি বছরও চাহিদা লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এতে বলা হয়, ওটিসি বা ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট এবং এক্সচেঞ্জগুলোর মজুদপ্রবাহসহ গত বছর বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের মোট চাহিদা ছিল ৪ হাজার ৮৯৯ টন, যা ২০২২ সালে ছিল ৪ হাজার ৭৪১ টন। এক বছরের ব্যবধানে চাহিদা বেড়েছে ৩ শতাংশ।
এনজে