আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণুবিজ্ঞানী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮১তম জন্মবার্ষিকী আজ। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী এই পরমাণুবিজ্ঞানী ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘী ফতেহপুর গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৭ বছর বয়সে তিনি ২০০৯ সালের ৯ মে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পর তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
এ উপলক্ষ্যে পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, এম এ ওয়াজেদ ফাউন্ডেশন এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, স্মৃতিচারণ, ফাতেহাপাঠ, মিলাদ মাহফিল, গরিব ও দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসুচি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে প্রয়াত বিজ্ঞানীর বাসভবন লালদীঘির ফতেহপুরের জয়সদন, উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এসব কর্মসূচি পালিত হবে। সকালে বিজ্ঞানীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্যদিয়ে দিনের কর্মসূচির সূচনা হবে। সকালে জয় সদন প্রাঙ্গণে দোয়া মাহফিল, আলোচনাসভা, তবারক বিতরণ, বিকালে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্মৃতিচারণ ও উপজেলা জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত, বিকালে দলীয় কার্যালয়ে স্মৃতিচারণ দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে গোপিনাথপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় কোরআন খতম ও শিক্ষার্থীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রয়াত বিজ্ঞানীর ভাতিজা পৌর মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামীম এসব কর্মসূচি নিশ্চিত করেন।
উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রয়াত দেশবরেণ্য পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮২তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আলোচনাসভায় উপস্থিত থাকবেন পীরগঞ্জ আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। এ কর্মবীর বিজ্ঞানী ২০০৯ সালের ৯ মে পরলোকগমন করেন।
তিনি পরমাণু গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদে দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তার গবেষণা কর্মের পরিধি ছিল বিস্তৃত। তিনি ফান্ডামেন্টাল ইন্টারেকশন অ্যান্ড পার্টিক্যাল ফিজিক্স, নিউক্লিয়ার অ্যান্ড রেক্টর ফিজিক্স, সলিড স্টেট ফিজিক্স, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিজম, হেল্থ অ্যান্ড রেডিয়েশন ফিজিক্স, রিনিউবল এনার্জি ইত্যাদি ক্ষেত্রে গবেষণা করেন।
ড. ওয়াজেদ বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে নীরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন। ষাটের দশকে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬২ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি গ্রেফতার হন এবং কিছু দিন জেল খাটেন। ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের পাশে থেকে তাদের সাহস ও শক্তি যুগিয়েছেন।
ওয়াজেদ মিয়া ঢাকার রংপুর জেলা সমিতির আজীবন সদস্য এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দু’বছর মেয়াদকালের জন্য এই সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।
এম জি