রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ নিজস্ব ব্র্যান্ডের গাড়ি বানাবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, ‘অচিরেই কোরিয়ার কারিগরি সহায়তায় প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে আধুনিকায়ন করে প্রগতি গাড়ি তৈরি করবে। জ্বালানি সাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) তৈরিরও পরিকল্পনা আছে।’
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের আধুনিক শোরুম ও সেলস সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে যে জায়গায় পৌঁছানোর কথা ছিল, সে জায়গায় আমরা যেতে পারিনি। প্রগতি বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে এখানে অ্যাসেম্বলিং করে। দেশে আজ অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। সময় এসেছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে অঙ্গীকার আমরা করেছি, সে লক্ষ্যে কাজ করার। বিশ্বায়নের যুগে প্রতিযোগিতা করে আমাদের টিকে থাকতে হবে। মানসম্মত ও যুগোপযোগী পণ্য উৎপাদন করতে হবে। শুধুমাত্র সিডান কার না, সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়ি ও মোটরসাইকেল উৎপাদন করতে হবে।’
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ঢাকা অফিস প্রাঙ্গণে শোরুম ও সেলস সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান সরকার দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে আধুনিকীকরণ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে গ্রাহককের সেবা সহজীকরণ ও মানোন্নয়নে আধুনিক শোরুম ও সেলস সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে আধুনিক ওয়্যারহাউজ। গ্রাহকরা এখন এ শোরুম থেকে সহজেই গাড়ি দেখতে ও কিনতে পারবেন। নিতে পারবেন বিক্রয় পরবর্তী সার্ভিস। অল্প সময়ের মধ্যেই গ্রাহকরা কার্যাদেশের মাধ্যমে গাড়ি সরাসরি গ্রহণ করতে পারবেন। শিগগির চালু হবে প্রগতি থ্রি-এস সেন্টার। সব স্তরের গ্রাহকের চাহিদা বিবেচনায় সিডান কার সরবরাহের পরিকল্পনাও নিয়েছে প্রগতি।
১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের জেনারেল মোটরসের কারিগরি সহযোগিতায় চট্টগ্রামের বাড়বকুণ্ডে গাড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যে ব্যক্তি মালিকানায় গান্ধারা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্প প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে জাতীয়করণ করেন। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে পরিবহন সেক্টরের উন্নয়নে ইংল্যান্ডের বেডফোর্ড কোম্পানির বাস ও ট্রাক সংযোজনের মাধ্যমে প্রগতি যাত্রা শুরু করে। এরপর ইংল্যান্ড থেকে সুপিরিয়র বাস ও বেডফোর্ড ট্রাক আমদানি করে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে জাপানের মিৎসুবিসি, নিশান ও ইসুজুসহ ভারত, চীন, কোরিয়া থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের গাড়ির সিকেডি আমদানি করে সংযোজন করে ব্যাপকভাবে বাজারজাত শুরু হয়।
বর্তমানে জাপানের মিৎসুবিসি মোটরস করপোরেশনের পাজেরো স্পোর্ট (কিউএক্স) জিপ, মিৎসুবিসি এল-২০০ ডাবল কেবিন পিকআপের সিকেডি আমদানি করে সংযোজন ও বাজারজাত অব্যাহত আছে। তাছাড়া জাপান থেকে মিৎসুবিসি ব্রান্ডের এএসএক্স জিপ (কমপ্লিট বিল্ট ইন) সিবিইউ অবস্থায় আমদানি করে বাজারজাত করা হয়।
এএ