মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা নেওয়া হবে: মন্ত্রী

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৪-০৩-০৩ ১১:০৪:০৩


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমান।

শনিবার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ এ্যাকোয়া প্রোডাক্টস কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বাপকা) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে গুণগত মানও নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের কমিটমেন্ট ঠিক রাখতে হবে। তিনি প্রাণীখাদ্য উৎপাদনে যেন কোনোভাবেই ভেজাল মেশানো না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব উল্লেখ করে আবদুর রহমান বলেন, আমাদের যে সম্পদ আছে তা কাজে লাগাতে পারলে আমাদের কোনো সমস্যা থাকবে না। তবে এক্ষেত্রে আমাদের কমিটমেন্ট ঠিক রাখতে হবে। আমাদের জাতিগতভাবেই এ বিষয়ে একটা ক্যাম্পেইন করতে হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সর্বদা গ্রামবাংলার মেহনতি মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের দিকে বিশেষ নজর রাখতেন। তার বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যে তা স্পষ্ট হয়ে উঠে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক সমবায় সংস্থার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে প্রদত্ত বাণীতে জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন।’

বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের ৭২ হাজার জেলেকে পুনর্বাসন ও মৎস্য শিল্পের উন্নয়নের জন্য ৯১ কোটি ২ লাখ টাকার একটি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য তার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান।

তিনি জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়নের জন্য অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০২১-২৫) মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জেলেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণ, নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন, ইকো-সেনসেটিভ অঞ্চলে মৎস্য অভয়াশ্রম, ইলিশ সম্পদের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা বিকাশে সামুদ্রিক মাছের মজুত নিরূপণ ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে আমাদের চাহিদা পূরণ করে মাছ বিদেশে রপ্তানি করার বিশাল সুযোগ তৈরি হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, জেলেদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, গ্রামীণ আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় প্রকৃত জেলেদের শনাক্তকরণ ও সামাজিকভাবে পেশার স্বীকৃতিস্বরূপ জেলে নিবন্ধন করা হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, যদিও উৎপাদনের সব ক্ষেত্রে আমরা সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছি, তবুও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের আরও মনযোগী হওয়ার অবকাশ রয়েছে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।

তিনি ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য লজ অফ সি-এর রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পর সুনীল অর্থনীতির যে ব্যাপক দ্বার উন্মোচিত হয়েছে তার যথাযথ সুফল পেতে সরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন, সমিতি, উদ্যোক্তা, এনজিওসহ সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বানও জানান।

অনুষ্ঠানে আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, ডা. মো. নজরুল ইসলাম এমপি, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রেয়াজুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এম জি