দেশীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটনের তৈরি প্রযুক্তি পণ্যে গ্রাহকদের আস্থা ও চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্যের বাজারে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের অবস্থান আরো সুসংহত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাড়ছে ওয়ালটনের প্রবৃদ্ধি। গত বছরের প্রথম ছয় মাসের (জানুয়ারী-জুন) তুলনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে ওয়ালটন পণ্যের বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। যা ছাড়িয়ে গেছে চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিক্রির লক্ষ্যমাত্রাকেও।
ওয়ালটন সূত্রমতে, ২০১৬ সালের শুরু থেকেই অভ্যন্তরীণ বাজারে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের সব পণ্যের চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে ব্যাপকহারে। বিশেষ করে, আশাতীত বিক্রি বেড়েছে ফ্রিজ, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, মোবাইলফোনসহ ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল হোম এ্যাপ্লায়েন্সের (গৃহস্থালী পণ্য)।
ওয়ালটন বিপণন বিভাগের ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর মোঃ রায়হান জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে সকল পণ্যের বিক্রি বেড়েছে আশাতীত। গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে ৫০ শতাংশেরও বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে ওয়ালটনের। এছাড়াও, টেলিভিশন (কালার লাইন ও এলইডি টিভি) বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৫৮ শতাংশ। তবে, চলতি বছরে এলইডি টিভি বিক্রিতে প্রায় ২৪১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ওয়ালটনের, অভ্যন্তরীণ টেলিভিশন বাজারে যা একটি মাইলফলক।
সূত্রমতে, ফ্রিজ ও টেলিভিশনের মতো হোম এ্যাপ্লায়েন্সের বাজারেও ওয়ালটনের শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭৮ শতাংশ বেশি হোম ও ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস বিক্রি হয়েছে। ব্যাপক গ্রাহক চাহিদার প্রেক্ষিতে ওয়ালটন নিজস্ব কারখানায় ব্লেন্ডার, ইন্ডাকশন কুকার, গ্যাস স্টোভ, রিচার্জেবল ফ্যান, সিলিং ফ্যান, এলইডি লাইট, প্যানেল লাইট, সুইচ-সকেট, এসিড লেড রিচার্জেবল ব্যাটারিসহ বেশ কিছু গৃহস্থালী পণ্য উৎপাদন করছে। এগুলো মানের দিক থেকে আমদানিকৃত পণ্যের তুলনায় অনেক উন্নত এবং দামেও সাশ্রয়ী।
জানা গেছে, গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানায় বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজ এর সমন্বয়ে উৎপাদন করা হচ্ছে বিশ্বমান সম্পন্ন অর্ধশতাধিক প্রযুক্তি পণ্য। চলতি বছরের শুরু থেকেই গ্রাহকদের চাহিদা, রুচি ও ক্রয় সক্ষমতা অনুযায়ী প্রতিটি পণ্যের অসংখ্য মডেল বাজারে ছেড়েছে দেশীয় ব্র্যান্ডটি। প্রোডাক্ট লাইনে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন মডেলের পণ্য।
বিশেষ করে, ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরে যুক্ত হয়েছে ’ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার’ প্রযুক্তির কম্প্রেসার। ফলে ওয়ালটনের নো-ফ্রস্ট ফ্রিজ অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। গ্রাহকের হাতের নাগালে প্রযুক্তি পণ্য পৌছে দিতে বাড়ানো হয়েছে সেলস পয়েন্ট। বেড়েছে লোকবল। দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিতে সার্ভিস পয়েন্টের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। সার্ভিস সেন্টারে লোকবল বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কারখানায় বাড়ানো হয়েছে উৎপাদন। বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে গড়ে তোলা হয়েছে পর্যাপ্ত মজুদ।
সেই সঙ্গে প্রযুক্তি পণ্যের সুফল ধনী-গরিব সবার কাছে পৌঁছে দিতে সর্বোচ্চ তিন বছরের কিস্তি সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন। কারখানায় উৎপাদন বাড়ায় কমেছে পণ্যের উৎপাদন খরচ। বাজারে আরো সাশ্রয়ী মূল্যে মিলছে ওয়ালটন পণ্য। পাশাপাশি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজনের ফলে আগের চেয়ে পণ্যের গুনগত মান আরো বেড়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি-এসব কারনে গ্রাহক পছন্দের শীর্ষে উঠে এসেছে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক ও বিপণন বিভাগের প্রধান এমদাদুল হক সরকার বলেন, যেকোন ম্যাচিউরড (পরিপক্ক) প্রতিষ্ঠানের জন্য স্ট্যান্ডার্ড বা সন্তোষজনক প্রবৃদ্ধির হার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। ওয়ালটন প্রায় ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। যা দেশের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্যের বাজারে ঈর্ষণীয়।
ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক ও বিপণন বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ইভা রেজওয়ানা বলেন, ‘ওয়ালটনের বৈশিষ্ট হচ্ছে- আমাদের প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিক। আশা করি সামনের দিনগুলোতে প্রবৃদ্ধির হার আরো বাড়বে।’
কর্তৃপক্ষ জানায়, কারখানায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজ এর সমন্বয়ে স্থানীয় আবহাওয়া উপযোগী পণ্য উৎপাদন, আন্তর্জাতিক মানের নিশ্চিতকরণ, অসংখ্য ডিজাইন ও বৈচিত্র্যময় কালার, সাশ্রয়ী মূল্য, শক্তিশালী পণ্য গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ, তিন বছরের সহজ কিস্তি সুবিধা, হাতের কাছেই দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা, দেশব্যাপী বিস্তৃত সেলস ও সার্ভিস পয়েন্ট থাকায় গ্রাহকরা ওয়ালটন ব্র্যান্ডকে পছন্দ করছেন।
সানবিডি/ঢাকা/আএসএস