জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা, সাইক্লোন, সমুদ্রপৃষ্ঠের লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ার মতো সংকট মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে ঢাকায় সুইডিশ দূতাবাসের জলবায়ু স্বাস্থ্য ও পরিবেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি ডা. ড্যানিয়েল নোভাকের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি) ২০২২ সালে চূড়ান্ত করা হয়েছিল। তারপর থেকে লক্ষ্য করেছিলাম জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যের মধ্যে একটা জোরালো সম্পর্ক আছে। আমরা যখন এনএপি চূড়ান্ত করি, তখন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটা রেফারেন্স ছিল। তবে সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের যে ১১৩টি এজেন্ডার মধ্যে স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা কোনো কাজ করিনি। এখন আমরা ভাবছি, এনএপিতে স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এখন পর্যন্ত যে জরিপ আমরা করেছি, বা বিভিন্ন তথ্য আমরা পাচ্ছি, বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকা ও নারীদের মধ্যে নীতিবাচক প্রভাব আছে। এতে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি চলে আসে। আমাদের উপকূলীয় এলাকায় এমনিতেই অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেখানে লবণাক্ততা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সুপেয় পানির সংকট আছে, তার ওপর স্বাস্থ্যের বিষয়টিও চলে আছে।
মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বাস্থ্যকে যে ধরনের গুরুত্ব দেওয়া উচিত, আগামীতে সেটা আমরা করতে চাই। আমরা আলাদাভাবে স্বাস্থ্যের এনএপি করব না, তবে বর্তমানে যে এনএপি আছে, তাতে স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে যোগ করতে চাই। সুইডেনের সঙ্গে আমাদের যে উন্নয়ন সম্পর্ক আছে, এই ক্ষেত্রটিকে ধরে সেটিকে আরও জোরদার করতে চাই।
বিষয়টিতে সুইডেনের গুরুত্ব বিষয়ে জানতে চাইলে সাবের হোসেন বলেন, অভিযোজনের মূল চিন্তাটা কী, মানে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত আমরা কীভাবে মোকাবিলা করব। আমরা হয়তো আগে ভাবতাম বন্যার কথা। সেগুলো অবশ্যই আছে। তবে বন্যা, সাইক্লোন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া, লবণাক্ততা ও খাদ্য নিরাপত্তার কথা বলি, তার সঙ্গে আমরা এখন স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়ে এসেছি।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি, জলবায়ুর প্রভাবটা সব জায়গায়ই আছে। যেহেতু বিষয়গুলো আমাদের কাছে বেশ পরিষ্কার ও সম্পর্কটা জোরালো। আর এটা কেবল বাংলাদেশেই না, সারা বিশ্বে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কপ-২৮ এ দুবাইতে স্বাস্থ্যের জন্য একটা দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। এটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বাংলাদেশে এটার প্রভাব বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি। সেটা আমরা কীভাবে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারি, সেটা দেখতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, সুইডিশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি নায়োকা মার্টিনেজ-ব্যাকস্ট্রোম।
এম জি