প্রচণ্ড গরমে সুস্থ থাকতে যা করবেন

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৪-০৪-১৬ ২১:৫৪:২১


এই মুহূর্তে দেশে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে বৃষ্টি না-হওয়া পর্যন্ত এই তাপদাহ কমবে না। ফলে শিগগিরই গরমের তীব্রতা কমছে না বলে মনে করেছেন আবহাওয়াবিদরা। তীব্র তাপমাত্রা হলে তা যেকোনো স্বাস্থ্যবান লোকের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাই যতক্ষণ না আপনাকে বাইরে বের হতে হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত ঠিক আছে কিন্তু বাইরে বের হলে আর স্বস্তিটুকু থাকবে না।

গরমের ঘাম এবং তাপ সহজেই ডিহাইড্রেশন হতে পারে এবং এর কারণে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারেন। তাই তীব্র এই গরমে কিছু বিষয়ে সতর্কতা জরুরি।

পর্যাপ্ত পানি পান:
ঘামের মাধ্যমে যে পানি বের হয়ে যায়, পর্যাপ্ত পানি ও অন্যান্য তরল পান করলে সেই ঘাটতি পূরণ হয়। সব ধরনের আবহাওয়ায়ই প্রতিটি ব্যক্তির জন্য ২ লিটার পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ। গ্রীষ্মকালে শরীর থেকে সহজে পানি কমে যাওয়ার কারণে আপনাকে একটু এসময় বেশি পানি পান করতে হবে।

ছাতা নিয়ে বাহিরে বের হওয়া:
এই গরম আবহাওয়ায় বিশেষ করে দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চেষ্টা করুন বাসার বাইরে কাজ না রাখার। যদি একান্তই বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, ছাতা নিয়ে বের হবেন এবং চোখ রক্ষায় সানগ্লাস ব্যবহার করবেন। খুব ভিড় হয় এমন এলাকায় যাবেন না।

ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান না করা:
প্রচণ্ড গরমে চলার পথে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করবেন না। কারণ অনেক সময় হঠাৎ ঠান্ডা পানি খেলে গলা ব্যথাসহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। বাইরে থেকে ঘেমে ঘরে ফিরেও সঙ্গে সঙ্গে হিমশীতল পানি খাওয়া ঠিক নয়।

ক্যাফেইন এবং নিকোটিন গ্রহণ না করা:
ক্যাফেইন এবং নিকোটিন গ্রহণ শরীরের মূল তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। এগুলো রক্তনালীকে সংকুচিত করে। যা রক্তকে উষ্ণ করে এবং এর ফলে আপনার গরম বেশি লাগে এবং ঘাম বেশি হয়। ডাবের পানি, লেবুর শরবত এবং ফলের রসের মতো ঠান্ডা পানীয় পান করুন। সেইসঙ্গে অ্যালকোহল গ্রহণও এড়ানো উচিত।

ভারী খাবার না খাওয়া:
ভারী খাবার খাওয়া শরীরে তাপ তৈরি হতে পারে এবং আপনি অস্বস্তি বোধ করতে পারেন। ভারী খাবার খাওয়ার পরে আপনার শরীরকে খাবার হজম এবং তা বিপাক করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এটি অবশেষে আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায় এবং ঘাম ও ক্লান্তির মতো সমস্যা দেখা দেয়। গরমে হালকা এবং তাজা রান্না করা খাবার খান। প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং নোনতা খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন।

ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখা:
যদি অতিরিক্ত গরম অনুভব করেন তবে তাপমাত্রা কমিয়ে আনার একটি সহজ উপায় হলো পায়ের আঙ্গুলগুলোকে ঠান্ডা করা। কিছু সময়ের জন্য আপনার পা ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে আরাম পাবেন এবং গরমও কম অনুভব করবেন। কিছুক্ষণ ভেজা মোজাও পরতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন যেন ঠান্ডা লেগে না যায়।

হালকা-ঢিলেঢালা সুতির কাপড় পরিধান করা:
টাইট ফিট করা এবং গাঢ় রঙের জামাকাপড় পরলে আরও বেশি ঘামতে পারেন। আপনি যদি ঠান্ডা থাকতে চান এবং অতিরিক্ত ঘাম এড়াতে চান তাহলে ঢিলেঢালা এবং হালকা রঙের সুতির কাপড় বেছে নিন। মোটা কাপড় পরলে ঘাম বাষ্পীভূত হয় না। এছাড়া গাঢ় রং আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি শোষণ করে। যে কারণে এ ধরনের কাপড় পরলে আরও বেশি গরম লাগে।

নিয়মিত গোসল করা:
গরমে প্রতিদিন গোসল করতে ভুলবেন না। সামান্য কাশি হলেও করবেন। গোসলের পর অবশ্যই চুলটা ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। ঘেমে গেলেও ভালোভাবে চুলটা শুকনো করে মুছে নিন।

হিট স্ট্রোক নিয়ে সতর্ক থাকা:
গরমের তীব্রতা বাড়ায় হিট স্ট্রোক নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এই গরমে কারোর তীব্র মাথা ব্যথা, প্রচণ্ড তৃষ্ণা, দ্রুত হৃৎস্পন্দন, শ্বাসকষ্ট এবং দ্রুত ও ভারী শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া, বমি বমি ভাব, পেশীতে ব্যথা, দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

বিএইচ