পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা ও বিনিয়োগে স্বাচ্ছন্দ্য দিতে জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড নিয়ে এলো ‘জনতা প্রত্যাশা’ নামের নতুন একটি ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট। এ প্রোডাক্টের আওতায় প্রতিষ্ঠানটি নিজেই গ্রাহকের হয়ে শেয়ার কেনাবেচা করবে। কোম্পানি ও বাজার বিশ্লেষণের আলোকে উপযোগী শেয়ার নির্বাচন করবে জনতা ক্যাপিটাল, যাতে বিনিয়োগে ঝুঁকি কমে আসে, বাড়ে মুনাফার সম্ভাবনা।
এই প্রোডাক্টের আওতায় চাইলে গ্রাহক শেয়ার কেনার জন্য ঋণ-সুবিধা (মার্জিন ঋণ) নিতে পারবেন। এই ঋণের সুদের হারও হবে তুলনামূলক নমনীয়।
সোমবার (১৩ মে) জনতা ক্যাপিটালের প্রধান কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এ প্রোডাক্টির উদ্বোধন করা হয়। জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এবং জনতা ক্যাপিটালের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জব্বার ইনোভেটিভ এই প্রোডাক্টটির উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জনতা ব্যাংক পিএলসির চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (ডিএমডি) মো. নুরুল আলম, এফসিএমএ এফসিএ, জনতা ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক মো. গোলাম মরতুজা, জনতা ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম মজুমদার, জনতা ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফয়েজ আলম এবং জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শহীদুল হক এফসিএমএ।
যেসব সুবিধা নিয়ে এল জনতা প্রত্যাশা:
প্রত্যাশা মূলত একটি ব্যাংকস ডিস্ক্রিশনারি অ্যাকাউন্ট (বিডিএ)। এই ধরনের একাউন্টের বিশেষত্ব হচ্ছে, এখানে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের হয়ে শেয়ার কেনাবেচা সংক্রান্ত যে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। অনেক বিনিয়োগকারী, বিশেষ করে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর পক্ষে পেশাগত ব্যস্ততার কারণে শেয়ারবাজার ও অর্থনীতির হালনাগাদ তথ্যের খোঁজখবর রাখা, কোম্পানির তথ্য বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয় না। তাই তাদের বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে ভুল হওয়ার আশংকা ও তুলনামূলক বেশি ঝুঁকি থাকে। বিডিএ একাউন্টের ক্ষেত্রে যেহেতু প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের হয়ে শেয়ার নির্বাচন ও কেনাবেচার সিদ্ধান্ত নেয়, তাই তাতে ঝুঁকি কম থাকে। কারণ প্রতিষ্ঠানের আছে পেশাগত দক্ষতা, নিজস্ব রিসার্চ টিম।
বর্তমানে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোতে বিডিএ প্রোডাক্ট খুবই কম। বেশিরভাগই হচ্ছে ইনভেস্টরস ডিস্ক্রিশনারি একাউন্ট (আইডিএ), যেখানে গ্রাহককে নিজের পছন্দে ও সিদ্ধান্তে শেয়ার কেনাবেচা করতে হয়।
জনতা ক্যাপিটালের নতুন এ প্রোডাক্টটি মূলত ডাক্তার, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী, গৃহিনী, অনাবাসী বাংলাদেশি, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং পোর্টফোলিও পরিচালনার জন্য যাদের সময় খুবই সীমিত, তাদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে।
জনতা ক্যাপিটালের জনতা প্রত্যাশা প্রোডাক্টটি অনেক নমনীয়। এর গ্রাহকরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী শেয়ারের ক্যাটাগরি বাছাই করার সুবিধা পাবেন। যেমন কোন বিনিয়োগকারী যদি সুদমুক্ত বা শরিয়াহসম্মত পোর্টফোলিও তৈরি করতে চান তবে তার 'প্রত্যাশা' একাউন্টের হিসাবটি সেভাবেই পরিচালনা করবে জনতা ক্যাপিটাল।
জনতা প্রত্যাশার আওতায় একটি বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করবে জনতা ক্যাপিটাল। এই অ্যাকাউন্টের বিপরীতে একসাথে পর্যাপ্ত শেয়ার কিনে গ্রাহকদের একাউন্টে বরাদ্দ করা হবে। এতে গ্রাহকরা কিছু বাড়তি সুবিধা পাবেন।
জনতা প্রত্যাশার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে ন্যূনতম ১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। আর এ অর্থ বিনিয়োগকারীরা কিস্তির মাধ্যমেও জমা করতে পারবেন। তবে ন্যূনতম ১ লাখ টাকা না জমা পর্যন্ত বিনিয়োগকারীর প্রত্যাশা একাউন্টটি সক্রিয় করা হবে না।
জনতা প্রত্যাশার গ্রাহকদের বিনিয়োগ ঝুঁকি কমাতে স্টপ-লস ম্যাকানিজমসহ বেশ কিছু নতুন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ফিচার ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও খাতভিত্তিক এবং ব্যক্তিগত স্টক এক্সপোজারের সতর্ক ব্যবস্থাপনা ও নন- মার্জিনেবল বা অতিমূল্যায়িত শেয়ারে বিনিয়োগ এড়িয়ে চলবে জনতা প্রত্যাশা। বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে প্রত্যাশা ব্যাবহারকারীদের ১:০.৮ অনুপাতের মার্জিন লোন সুবিধা দিবে জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। যার সুদের হার হবে মাত্র ১২ শতাংশ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনতা ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জব্বার বলেন, বিনিয়োগকারীরা অনেক হতাশার মধ্যে থেকেও মার্কেট ছেড়ে যাননি। প্রত্যাশা আছে বলেই আমরা বেঁচে আছি। আমি মনে করি জনতা প্রত্যাশার মূল বিষয়গুলো দেখে বিনিয়োগকারীরা এখানে আসতে পারেন। এখানে বিনিয়োগ করলে ভালো মুনাফা করার সুযোগ থাকবে।
তিনি বলেন, আমি চাইনা জনতা ব্যাংকে এসে কেউ যেন প্রতারিত না হন। আমাদের এই প্রোডাক্টে ঝুঁকি কম থাকছে। তাই এখানে বুঝেশুনে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাব।
সভাপতির বক্তব্যে জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শহিদুল হক বলেন, আমাদের জন্য এটা একটা খুশির দিন। বিনিয়োগকারীদের মনের যেসব আক্ষেপ রয়েছে এইসবগুলো মিলিয়েই আমাদের জনতা প্রত্যাশা। এখানে বিনিয়োগ করে সকল বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন ইনশাআল্লাহ।
বিএইচ