সরকারি বন্ড এবং অন্যান্য সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) আইন মানছে না ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
নিয়ম অনুসারে কোম্পানিটিকে গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত প্রিমিয়ামের ৩০ শতাংশ সরকারি বন্ড ও সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু কোম্পানিটি তা পরিপালন করছে না।
এ খাতে বিনিয়োগে সুদ বাবদ মুনাফা কম হওয়া এ খাতের টাকা অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। তাই কোম্পানিটিকে সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের বিধান মেনে চলতে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে আইডিআরএ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইডিআরএ’র সদস্য ও মুখপাত্র জুবের আহমেদ খান। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী জীবন বিমা কোম্পানিগুলোকে প্রিমিয়ামের ৩০ শতাংশ সরকারি সিকিউরিটিজ ও বন্ডে বিনিয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে ফারইস্ট লাইফসহ ইসলামী কোম্পানিগুলোর এ ব্যাপারে অনীহা দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তাই কোম্পানিগুলোকে এই নির্দেশনা মানতে একটি চিঠি দিয়েছি।
জানা গেছে, ১৯৩৮ সালের বিমা আইন অনুসারে বিমা কোম্পানিকে তাদের সংগৃহীত প্রিমিয়ামের ৩০ শতাংশ সরকারি বন্ড ও সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে হবে। বাকি ৭০ শতাংশ ব্যাংক, পুঁজিবাজারসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারেব।
কিন্তু সরকারি সিকিউরিটিজে প্রত্যাশা অনুসারে মুনাফা না হওয়ায় এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ নেই কোম্পানিটির। অথচ পুঁজিবাজার, সম্পত্তিসহ নানা ঝুঁকিপূর্ণ খাতে পলিসি ও শেয়ারহোল্ডারদের তহবিল বিনিয়োগে পিছিয়ে নেই কোম্পানিটির।
এ বিষয়ে জানতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হেমায়েত উল্লাহকে মুঠোফোনে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। বাংলানিউজের পরিচয় দিয়ে এসএমএস পাঠিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো উত্তর মেলেনি।
তবে নাম না প্রকাশের শর্তে ডিজিএম পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ইসলামী বন্ডে সুদের পরিমাণ কম হওয়ায় আমরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে বাধ্য হই। তবে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করবো।
এর আগে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কষ্টে উপার্জিত ২শ' কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন করার তথ্য পেয়েছে আইডিআরএ। কোম্পানিটির ২০১২, ২০২৩ এবং ২০১৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদেনগুলোর ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে অনিয়ম ধরতে বিশেষ নিরীক্ষণের নির্দেশনাও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সাত বছরে কোম্পানির মোট ২শ' কোটি ৫১ লাখ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
অভিযোগ রয়েছে, বিমা কোম্পানির ‘ব্যবস্থাপনা ব্যয়’ আইনের তোয়াক্কা না করে নামে-বেনামে নিজেদের ইচ্ছেতো ভুয়া এজেন্টের নামে কমিশন গ্রহণ, ভুয়া বিনিয়োগ এবং অবৈধভাবে ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মিলে বিভিন্ন কৌশলে এ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস