আরও একটি বিশ্বকাপ ম্যাচ, পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের আরও একটি জয়। নাসাউ কাউন্টির মন্থর পিচে ভারতের ব্যাটিং ধসের পর ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর স্বপ্ন দেখতে থাকা পাকিস্তানকে যেন ভারত সেই বাস্তবতাটাই বুঝিয়ে দিল আরেকবার। তাই টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ ডিফেন্ড করার রেকর্ড গড়ে ভারত হাসল শেষ হাসি।
পাওয়ারপ্লে শেষের পরেও জয়ের সম্ভাব্যতায় দেখানো হয়েছিল পাকিস্তানের জয়ের সম্ভাবনা ৯২ শতাংশ। ব্যাটে-বলে সমান রান দরকার ছিল জয়ের জন্য। ১২ ওভারে ৭২ রান করে সেই লক্ষ্যে ঠিকই টিকে ছিল পাকিস্তান। পরের ৩০ বল থেকে উঠেছে মোটে ১৭ রান। উইকেট হারিয়েছে ৩টি। নাসাউ কাউন্টির বোলিং সহায়ক পিচে আরও একবার দেখা গেল বোলারদের কারিশমা।
১২০ রানের লক্ষ্যে পাকিস্তানের শুরুটা ছিল বেশ সাবধানী। সেই সাথে ভারতও যেন ফিল্ডিংয়ে তাদের প্রতি সদয় হচ্ছিল! বাবর আজমের কঠিন এক ক্যাচ পড়ল। তবে শিভাম দুবে যেই ক্যাচটা ফেলে রিজওয়ানকে জীবন দিয়েছিলেন ভারতের ফিল্ডিংয়ে সেটা সচরাচর দেখা যায় না। বাবরের মিসটার অবশ্য মাশুল গোণার কোনো সুযোগ না রেখে জাসপ্রিত বুমরাহ তাকে থামান ১৩ রানে। পাওয়ারপ্লেতে ৩৫ রান এলে পাকিস্তান খোলস থেকে বের না হয়ে রয়েসয়েই খেলে যাচ্ছিল। অবশ্য তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে যাওয়ার কোনো প্রয়োজনও ছিল না।
অনেকটা তাদের বাধ্য করতেই হার্দিককে আক্রমণে আনা হলে আবারও বাউন্সারের দারুণ ব্যবহার দেখান তিনি। মাঝে অক্ষরের কাছে স্টাম্প খুইয়ে উসমান ফিরলে এরপর বের হয়ে এসে ফাখার। ভারতের দুর্দান্ত বোলিং লাইন সামলে নেয়ার চেষ্টা করলেও বাউন্সারে তাকে কাবু করেন হার্দিক। দুজনেই ১৩ রানে ফিরলেও পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে খুব একটা ঝামেলা তখনও হয়নি। ১১-১৫ ওভারের ওই সময়টাতেই অবশ্য এরপর ভারত খেলায় ফেরে। দুই উইকেটের পরিক্রমায় সুযোগ বুঝে রোহিত ফেরান বুমরাহকে। ফিরেই দারুণ এক ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে প্রথম বলেই ৪৪ বলে ৩১ রানে থাকা রিজওয়ানের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন বুমরাহ। ম্যাচে শক্তভাবে ফেরত এসে সেখান থেকেই ভারত চেপে বসে।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ভারতও সুবিধা করতে পারেনি কোনোক্রমেই। বরং মোহাম্মদ আমির, নাসিম শাহ এবং হারিস রউফদের বোলিং তোপে মাত্র ১১৯ রানেই গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস। তাতে ভারতও দেখেছিল লজ্জার কিছু রেকর্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটি ছিল তাদের চতুর্থ সর্বনিম্ন স্কোর। আর অলআউট হওয়া ইনিংসে এটি দ্বিতীয়। প্রথম ব্যাট করে বিশ্বকাপে এত কম রানে কখনোই অলআউট হয়নি তারা।
বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে সুর্যকুমার যাদব কিংবা শিভাম দুবে, মোটাদাগে ব্যর্থ সবাই। খেললেন কেবল ঋষভ পান্ত। তার ৪২ রানটাই ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝে বড় প্রাপ্তি। শেষদিকে আর্শদ্বীপ সিং রান করায় ভারতের রান গিয়েছে ১১৯ পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পক্ষেই বাজি ধরার লোক ছিলেন বেশি।
কিন্তু ভারতীয় বোলারদের দুর্দান্ত বোলিং আর পাকিস্তানি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত আর জয় পাওয়া হয়নি ম্যান ইন গ্রিনদের। নিউইয়র্কে আরও একবার ভারতের কাছে হতাশ হতে হলো পাকিস্তানের ক্রিকেট ভক্তদের।
এম জি