রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মচারীর বদলি ঠেকাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হস্তক্ষেপের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এজন্য রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতও করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
ওই কর্মচারীর নাম খলিলুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দফতরের টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। খলিলুর রহমান নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, খলিলুর রহমান ওই কর্মচারী ১৯৯৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস চালক হিসেবে যোগদানের কিছুদিন পর তাকে টেকনিশিয়ান পদে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি দীর্ঘদিন থেকে ওই পদে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু সম্প্রতি দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে গত ২৮ আগস্ট তাকে ওই পদ থেকে বদলি করে অ্যাম্বুলেন্সের চালকের দায়িত্ব দেন পরিবহন দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক মাইনুল হক। বিষয়টি তাকে মৌখিকভাবে জানানো হলে ওইদিন রাতেই অধ্যাপক মাইনুল হককে ফোন দিয়ে হুমকি-ধামকি দেন খলিলুর রহমান। এরপর বিষয়টি নিয়ে রোববার দুপুরে খলিলুর রহমান রাজশাহী মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে নিয়ে উপ-উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তবে সাক্ষাতে তাদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কি ধরনের কথাবার্তা হয়েছে তা জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে পরিবহন দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক মাইনুল হক বলেন, ‘দায়িত্বে অবহেলার কারণে খলিলুর রহমানকে টেকনিশিয়ান থেকে বদলি করে অ্যাম্বুলেন্সের চালকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি আমাকে ফোন করে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। নিরাপত্তার স্বার্থে পরের দিন আমি মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। আজকের বিষয়টি আমি শুনলাম তিনি নাকি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে উপ-উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন।’
এ বিষয়ে তৃতীয় শ্রেণির ওই কর্মচারী খলিলুর রহমান বলেন, আমি ১৯৯৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চালক হিসেবে যোগদান করি। এর কিছুদিন পরই আমার কাজ দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসক আমাকে টেকনিশিয়ানের দায়িত্ব দেয়। কিন্তু বর্তমান প্রশাসক এসে আমাকে আবার অ্যাম্বুলেন্সের চালকে বদলি করার ষড়যন্ত্র করছে।
বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ডেকে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যেহেতু স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাই তারা আমার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে এসেছিলেন মাত্র।
পরিবহন দফতরের প্রশাসককে হুমকি দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি শুধু ওনাকে বলেছি স্যার আমার অপরাধ কী। আমাকে সে অনুযায়ী শাস্তিও দিতে পারেন। কিন্তু আমাকে এভাবে অ্যাম্বুলেন্সের চালকের পদে নামিয়ে দিতে পারেন না।
সাক্ষাতের বিষয়ে মতিহার থানার আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বলেন, খলিলুর রহমানের বিষয়টি নিয়ে আমি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন নেতাকে নিয়ে উপ-উপচার্যের সঙ্গে বসেছিলাম। তিনি আমাদের বদলি হয়নি বলে জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সাক্ষাতের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়। খলিলুর রহমানকে অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত মোতাবেক বদলি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আজকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা আমার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। আমি তাদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলেছি।
সানবিডি/রাবি/হৃদয়/এসএস