একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। রোববার (২৩ জুন) রাত ৮টায় একাদশে ভর্তির কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়। ফলফলে কোন শিক্ষার্থী, কোন কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন, তা জানা যাবে।
অনলাইনে প্রথম ধাপে আবেদন করা শিক্ষার্থীরা একাদশে ভর্তির ওয়েবসাইটে (https://xiclassadmission.gov.bd/) প্রবেশ করে ফলাফল ও পরবর্তী সব নির্দেশনা জানতে পারবেন।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, প্রথম ধাপের ফল পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের সতর্কতার সঙ্গে পরবর্তী করণীয়গুলো সম্পন্ন করতে হবে। ভুল করলে বা কোনো সমস্যায় পড়লে, তাৎক্ষণিক হটলাইন নম্বরে বা সরাসারি শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করতে হবে। আশা করি–সব শিক্ষার্থী সফলভাবে কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে।
জানা গেছে, গত ২৬ মে সকাল ১০টা থেকে অনলাইনে ভর্তি আবেদন শুরুর কথা ছিল। তবে সার্ভার জটিলতায় তা একদিন পিছিয়ে যায়। ২৭ মে থেকে শিক্ষার্থীরা আবেদন শুরু করেন। এ প্রক্রিয়া চলে ১৩ জুন পর্যন্ত।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্র ও একাদশে ভর্তির কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী—প্রথম ধাপে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখের কিছু বেশি শিক্ষার্থী সফলভাবে আবেদন করেন।
কলেজ পাওয়া শিক্ষার্থীদের করণীয়:
প্রথম ধাপে আবেদন করে কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীকে দ্রুত কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। প্রথমেই তাকে ৩৩৫ টাকা ফি পরিশোধ করে প্রাথমিকভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে নিশ্চায়ন ফি পরিশোধ করতে কারও অসুবিধা হলে সরাসরি বিকাশের মাধ্যমে নিশ্চায়ন ফি দিয়েও নিশ্চায়ন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য https://xiclassadmission.gov.bd/-এ ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
এদিকে, কেউ যদি প্রথম ধাপে কাঙ্ক্ষিত কলেজ না পান, সেক্ষেত্রেও তাকে প্রাথমিক নিশ্চায়ন করতে হবে। ২৯ জুন রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক নির্বাচন নিশ্চায়ন করতে পারবেন। এরপর তিনি মাইগ্রেশনের সুযোগ পাবেন। ৪ জুলাই পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে।
তবে কেউ যদি পছন্দের কলেজ না পেয়ে ৩৩৫ টাকা পরিশোধ করে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন না করেন, সেক্ষেত্রে তাকে দ্বিতীয় ধাপে পুনরায় নতুন করে আবেদন করতে হবে। প্রথম ধাপের ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে তিনি পুরোপুরি ছিটকে পড়বেন।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে আবেদন:
৩০ জুন শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপের আবেদন প্রক্রিয়া। এ ধাপে আবেদন চলবে ২ জুলাই রাত ৮টা পর্যন্ত। ৪ জুলাই রাত ৮টায় দ্বিতীয় ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। ৫ থেকে ৮ জুলাই রাত ৮টা পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া চলবে। এরপর ১২ জুলাই দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে।
৯-১০ জুলাই তৃতীয় ধাপে আবেদন শুরু হবে। ১২ জুলাই তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ এবং ১৩-১৪ জুলাই তৃতীয় ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন করতে হবে।
১৫ থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত তিন ধাপে নির্বাচিত এবং সফলভাবে নিশ্চায়ন করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। ৩০ জুলাই অনুষ্ঠানিকভাবে সারাদেশে একযোগে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে।
ভর্তি ফি ও সেশন চার্জ:
নীতিমালা অনুযায়ী—এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে পাঁচ হাজার টাকা, মেট্রোপলিটন (ঢাকা ছাড়া) বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে তিন হাজার টাকা, জেলায় দুই হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্বলে দেড় হাজার টাকা।
নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ভার্সনে সাড়ে ৭ হাজার টাকা, ইংরেজি ভার্সনে সাড়ে ৮ হাজার টাকা, মেট্রোপলিটন (ঢাকা ছাড়া) বাংলা ভার্সনে ৫ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৬ হাজার টাকা, জেলায় বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্বলে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা।
নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ভার্সনে সাড়ে ৭ হাজার টাকা, ইংরেজি ভার্সনে সাড়ে ৮ হাজার টাকা, মেট্রোপলিটন (ঢাকা ছাড়া) বাংলা ভার্সনে ৫ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৬ হাজার টাকা, জেলায় বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্বলে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা।
কলেজ পরিবর্তনের নিয়ম:
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পূর্বানুমতি ছাড়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পর কোনো শিক্ষার্থীরা ছাড়পত্র (টিসি) ইস্যু করা যাবে না। কিংবা বোর্ডের পূর্বানুমতি ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইস্যুকৃত ছাড়পত্রের বরাতে ভর্তি করা যাবে না।
ছাড়পত্রের (টিসি) মাধ্যমে ভর্তির ক্ষেত্রে কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের ভর্তিকৃত ছাত্রছাত্রী ভর্তির ১৫ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন ফিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে জমা দিতে হবে।
একাদশ শ্রেণিতে আসন কত:
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি বোর্ডে মোট পাস করেছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী। এরপর ফল পুনঃনিরীক্ষণে আরও প্রায় ৯০০ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। দেশের সরকারি-বেসরকারি কলেজ, মাদরাসা, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট আসন প্রায় ৩৪ লাখ। সেই হিসাবে সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও ফাঁকা থাকবে অর্ধেকের বেশি আসন।
বিএইচ