ঈদ মানেই বিনোদন। বিনোদনের প্রধান মাধ্যম টেলিভিশন। আর তাই ঈদ উপলক্ষে বেড়েছে টেলিভিশন সেট বিক্রি। তবে এবার বেশি বিক্রি হচ্ছে এলইডি টিভি। দেশের শীর্ষব্র্যান্ড ওয়ালটনের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, দেশে তৈরি উচ্চমানের ওয়ালটন টিভিই এবার বিক্রি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। ঈদ উপলক্ষে ওয়ালটন বাজারে এনেছে ৩৬ টি মডেলের নতুন এলইডি টিভি।
জানা গেছে, ঈদ উল আযহা বা কোরবানির ঈদকে ঘিরে গত আগস্ট মাসে রেকর্ড পরিমান এলইডি টিভি বিক্রি করেছে ওয়ালটন। ঈদ উপলক্ষ্যে ওয়ালটন বাজারে ছেড়েছে ১৯, ২০, ২৪, ২৮ ও ৩২ ইঞ্চির আকর্ষণীয় ডিজাইনের মোট ৩৬ টি নতুন মডেলের এলইডি টিভি। এর মধ্যে ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা পেয়েছে ২০ ইঞ্চির এলইডি টিভি। এটির দুই পাশে শক্তিশালী সাউন্ড বক্স থাকায় এর নাম দেয়া হয়েছে ‘বুম বক্স’। ক্রেতারা বলছেন, জোরালো শব্দ এবং ঝকঝকে ছবির কারণে নামটি যথার্থই স্বার্থক। এর বাইরে নতুন এসেছে ১৯, ২৪, ২৮ ও ৩২ ইঞ্চির সিলভার ভার্সনের এলইডি টিভি। বাজারে আরো রয়েছে ৪০, ৪৩, ৪৯ ও ৫৫ ইঞ্চির এলইডি টিভি। মোট ৮৫ টি মডেলের মধ্যে ২৭ টি রয়েছে কালার লাইন বা সিআরটি।
ওয়ালটনের বিপণন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এমদাদুল হক সরকার জানান, গত কয়েকমাসে সারা দেশে এলইডি টিভির বিক্রি বেড়েছে উল্লেখযোগ্যহারে। মূলত, চোখের জন্য স্বস্তিদায়ক, ঝকঝকে ছবি, রুচিসম্মত ডিজাইন, সাশ্রয়ী মূল্য এবং বিদ্যুত সাশ্রয়ী হওয়ায় সম্প্রতি এলইডি টিভির প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ বেড়েছে। দেশীয় ব্র্যান্ডের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এলইডি টিভি বাজারে আসায় সিআরটি (ক্যাথোড রে টিউব) টিভির চেয়ে এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়ড) টিভির বিক্রি ও চাহিদা বেড়েছে অনেক। ওয়ালটন এই চাহিদার সিংহভাগ নিজেদের করে নিয়েছে। ওয়ালটন দিচ্ছে ছয় মাসের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি, প্যানেল ও খুচরা যন্ত্রাংশে দুই বছরের ওয়ারেন্টি। দেশব্যাপী বিস্তৃত আইএসও স্ট্যান্ডার্ড সেলস ও সার্ভিস নেটওয়ার্ক থাকায় ওয়ালটন এলইডি টিভিতে গ্রাহকদের আস্থা বেড়েছে।
তিনি আরো বলেন, কোরবানি ঈদকে ঘিরে গত জুন ও জুলাই মাসে গতবারের চেয়ে কয়েকগুন বেশি এলইডি টিভি বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে, গত জুলাই মাসে যে কোন সময়ের তুলনায় রেকর্ড পরিমান এলইডি টিভি বিক্রি হয়েছে ওয়ালটনের।
কর্তৃপক্ষ জানায়, সর্বাধুনিক ও অটোমেটিক প্রোডাকশন লাইনে তৈরি হচ্ছে ওয়ালটনের এলইডি টিভি। প্লাস্টিক কেবিনেট, স্পীকার, রিমোট কন্ট্রোল ইউনিট, মাদার বোর্ড এবং প্যানেল প্রোডাকশনের জন্য পৃথক ম্যানুফাকচারিং লাইন স্থাপন করা হয়েছে গাজীপুরের চন্দ্রায় অবস্থিত ওয়ালটন মাইক্রো-টেক কর্পোরেশনে। এর ফলে এলইডি টিভি উৎপাদনে বাংলাদেশ যেমন স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করছে; তেমনি নিজস্ব তত্ত্বাবধানে মান নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে। নিজস্ব কারখানায় মৌলিক কাঁচামাল থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ তৈরি করায় উৎপাদন খরচ কমেছে বহুলাংশে। যার সুফল পাচ্ছেন ক্রেতারা- চলতি বছর টিভির দাম কয়েক দফা কমিয়েছে ওয়ালটন।
বিক্রেতারা জানান, ওয়ালটনের ১৯ ইঞ্চি এলইডি টিভি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ হাজার ৯০০ টাকায়। বর্তমান বাজারে যেখানে সিআরটি টিভির দামও এরচেয়ে বেশি। হাই পিকচার রেজ্যুলেশনের ২৪ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন ক্রেতারা পাচ্ছেন ১৩৯০০ টাকায়, ২৮ ইঞ্চি ১৭৯০০ টাকায়, ৩২ ইঞ্চি ২০৪০০ টাকায়, ৪০ ইঞ্চি ৩৩৭০০ টাকায়, ৪৩ ইঞ্চি ৪২৯০০ টাকায়, ৪৯ ইঞ্চি ৫৭৯ ০০ টাকায় ও ৫৫ ইঞ্চি এলইডি টিভি পাচ্ছেন ৭০৯০০ টাকায়। ওয়ালটনের ৩২ ইঞ্চি এন্ড্রয়েড স্মার্ট এলইডি টিভি বিক্রি হচ্ছে ২৯৯০০ টাকায়, ৪৩ ইঞ্চি ৫২৯০০ টাকায়, ৪৯ ইঞ্চি ৬৩৯০০ টাকায় এবং ৫৫ ইঞ্চি স্মার্ট এলইডি টিভি ৮১৯০০ টাকায়।
ওয়ালটনের অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, বিশ্বের যে কোন ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ নিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজ এর সমন্বয়ে তৈরি হচ্ছে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের এলইডি টিভি। উৎপাদনের প্রতিটি স্তরে কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কোয়ালিটি কন্ট্রোলে নেয়া হয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি।
ওয়ালটনের প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন জানান, ওয়ালটন এলইডি টিভিতে ব্যবহার করা হচ্ছে আইপিএস (ইন প্ল্যান সুইচিং), এডিএস (এ্যাডভান্স সুপার ডাইমেনশন সুইচ) এবং এইচএডিএস (হাই এ্যাডভান্স সুপার ডাইমেনশন সুইচ) প্রযুক্তির প্যানেল। এর ফলে দর্শকরা ওয়াইড ভিউয়িং এ্যাঙ্গেল এবং হাই কন্ট্রাস্ট এর পিকচার পাচ্ছেন। এলইডি টিভির মাদারবোর্ডে সংযোজন করা হয়েছে পাওয়ার সার্জ প্রোটেকশন এবং ইনডিউচড লাইটেনিং প্রোটেকশন সার্কিট; যা বজ্রপাত ও হাই ভোল্টেজজনিত ক্ষতির হাত থেকে টিভিকে রক্ষা করবে।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস