যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের হামলায় সিরিয়ার ৬২ সেনা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ার এ হামলার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
আলজাজিরা অনলাইনের এক খবরে রোববার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সিরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শনিবার জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নিয়ন্ত্রণে থাকা দের আজ-জোর শহরের কাছে সিরিয়ার একটি সামরিক অবস্থানে জোটের বিমান থেকে হামলা চালানো হয়। সিরীয় সরকারের অনুগত সামরিক বাহিনীর কোনো অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের এটিই প্রথম কোনো হামলা।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে দুঃখ প্রকাশ করে পাওয়ার বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি।’ এ বিষয়ে রাশিয়াকে আশ্বস্ত করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘যদি ধরে নিই, সত্যিই সিরিয়ার সামরিক অবস্থানে হামলা চালানো হয়েছে, তবে বলল, এ আমাদের ইচ্ছা নয়। প্রাণহানির জন্য সত্যিই আমরা দুঃখিত।’
রাশিয়া জানিয়েছে, জঙ্গিবিরোধী আন্তর্জাতিক সামরিক জোটের হামলায় সিরীয় সরকারের অনুগত বাহিনীর ৬২ সদস্য নিহত এবং শতাধিক সদস্য আহত হয়েছেন।
রুশ কর্তৃপক্ষ আরো জানিয়েছে, প্রতিবেশী দেশ ইরাক থেকে দুটি এফ-১৬ এবং দুটি এ-১০ যুদ্ধবিমান সিরিয়ার আকাশে উড়ে গিয়ে হামলা চালায়।
মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, জোটের হামলায় সিরিয়ার ৮৩ সেনা নিহত হয়েছে। তারা আরো নিশ্চিত করেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটেরই হামলা ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারাও এ হামলার কথা স্বীকার করেছেন। আইএসের সামরিক গাড়িবহর ও ট্যাংক মনে করে হামলা চালায় তারা।
এদিকে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা নিয়ে দুঃখ প্রকাশের সময় সামান্থা পাওয়ার রাশিয়ার দিকে তির্যক আঙুল তোলেন। এ নিয়ে রাশিয়া ফায়দা তুলছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পাওয়ার বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকে হামলার ব্যাখ্যা চাইছে রাশিয়া। এর পরিবর্তে রাশিয়ার উচিত ছিল, সিরীয় সরকারের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলা।
এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভিটালি চুরকিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ আনেন। সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, জোটের হামলার টার্গেটের বাইরে থাকবে সিরীয় সামরিক বাহিনীর সব অবস্থান।
চুক্তি অনুযায়ী, সোমবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তবে সিরীয় সরকার ও বিদ্রোহীদের বাহিনী এর মধ্যেও যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে। এ জন্য তারা একে অপরকে দায়ী করছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এবারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তবে এখন তা আবার হুমকির মুখে পড়েছে।