সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদীদের প্রতি নৈতিক ও বৈশ্বিক সমর্থন না দেওয়ার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে ভাষণে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
আমেরিকা থেকে ইউরোপ, আফ্রিকা থেকে এশিয়ায় অগুনতি নিরীহ মানুষ সন্ত্রাসবাদের শিকার হচ্ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসীদের সমূলে উৎখাতে বিশ্ববাসীর ঐক্যের কথা বলেন।
সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদের মূল কারণগুলো আমাদের চিহ্নিত করতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একই সঙ্গে এদের পরামর্শদাতা, মূল পরিকল্পনাকারী, মদদদাতা, অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহকারী এবং প্রশিক্ষকদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথাও বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে যেসব সন্ত্রাসী গ্রুপের উদ্ভব হয়েছিল তাদের নিষ্ক্রিয় করা, তাদের নিয়মিত অর্থ সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম নির্মূল করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার সফল হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। তবে গত ১ জুলাই আমরা এক ঘৃণ্য সন্ত্রাসী হামলার শিকার হই। ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয় দেশীয় কিছু উগ্রপন্থী-সন্ত্রাসী ২০জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এ সময় ১৩ জন জিম্মিকে উদ্ধারে সক্ষম হই। এই ভয়ংকর ঘটনা বাংলাদেশের জনগণের মনে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে আমরা এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে উঠে আসে আইলান কুর্দি ও ওমরান দাকনিশের কথাও; যাদের ছবি নাড়িয়ে দেয় বিশ্বের প্রতিটি বিবেকবান মানুষকে। বিশ্বনেতাদের সামনে শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন, কী দোষ করেছিল আইলান কুর্দি? কী দোষ করেছিল ওমরান?
জাতিসংঘে অভিবাসী ও শরণার্থী বিষয়ক সম্মেলনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, এই সম্মেলনের ফলাফল বর্তমান সময়ে অভিবাসনের ধারণা এবং বাস্তবতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে সাহায্য করবে।’
তার সরকারের নেওয়া চলমান উন্নয়ন প্রকল্প এবং নানা সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, শক্তিশালী, ডিজিটাল এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। সেজন্য আমাদের সরকার উদ্ভাবনমূলক সরকারি সেবা বিতরণ, জনসাধারণের তথ্য লাভের অধিকার এবং রাষ্ট্র পরিচালনা ও সেবা খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে।’
নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সম্ভবত বাংলাদেশ বর্তমানে পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার এবং সংসদ উপনেতা সকলেই নারী।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস