স্বাস্থ্যই সকল সুখেরমূল’ কিংবা ‘মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন’ এরকম নানা প্রবাদের সঙ্গে আমরা ছোটবেলা থেকে পরিচিত। ফলে দুরন্ত শৈশব ফেলে এসে ব্যস্তময়, অবসরহীন ও পরিশ্রমহীন কর্মজীবনে স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় থাকেন। আবার নতুন করে ডায়াবেটিস শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার পর নিজের ওজন কমানো নিয়ে চিন্তিত হন না- এমন মানুষের সন্ধান পাওয়া হয়তো দুষ্কর।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অনেকেই শপথ করেন, পরের দিন সকালেই ব্যায়াম শুরু। আর পরের দিন ঘুম ভাঙ্গার পর অফিসের ব্যস্ততায় ব্যায়াম পরাজিত হয় সময়ের কাছে। আবার ঘুমাতে যাওয়ার আগে, পুরনো শপথ। এমনকি জগিংয়ের জন্য আলাদা জুতা, স্যুট এবং প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে সব ধরনের প্রস্তুতিও নেন অনেকেই।
‘আজ পারলাম না, কাল করবো ঠিকই; এইভাবে দিন গেলো ফাঁকি’র মতোই যখন দিনকে দিন ঘুরে ওজন বেড়ে যায় নতুন জুতা পুরনো হয়ে যায়। কিন্তু বাইরে যাওয়ার সেই সময়টুকুও আর হয়ে ওঠে না।
এমন ব্যস্ত মানুষরা ঘরেই করতে পারেন শরীর চর্চা। হালকা কিছু যন্ত্র নিজের কাছে রাখলে প্রতিদিনের ব্যায়ামের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। আবার ঘরের ছোট শিশুরাও ব্যায়ামে অভ্যস্ত হয়ে যাবে এতে।
১. এক্সারসাইজ বল:
সাধারণত ৩৫-৮৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের বলটি সুইস বল নামেও পরিচিত। ভেতরে বাতাস ভরা রাবার দিয়ে তৈরি বলটিকে অ্যাথলেটদের দ্বিতীয় গুরু বলা হয়। সঠিক নির্দেশনার মাধ্যমে এই বল দিয়ে ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের বাড়তি মেদ কমানোর পাশাপাশি সুন্দর শরীর গঠন করা সম্ভব।
২. কোর ট্রেইনিং হুইল:
পেটের চর্বি কমানো এবং শরীরের উপরের অংশের গঠন সুন্দর করতে কোর ট্রেইনিং হুইলের বিকল্প পাওয়া দুষ্কর। এর সাহায্যে প্রতিদিনের ব্যায়াম করা হলে এক বছরের মধ্যেই সিক্স প্যাক তৈরি সম্ভব।
৩. এক্সারসাইজ ব্যান্ড:
ভারী যন্ত্রের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত এ ব্যান্ডকে রেজিসট্যান্স ব্যান্ডও বলা হয়। দরজার ফাঁকে কিংবা জানালার গ্রিলে এ ব্যান্ড লাগিয়ে মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই ভালো ব্যায়াম করা সম্ভব। বছরখানেক এ ব্যান্ড ব্যবহারের মাধ্যমে পেশীবহুল শরীর তৈরি করা সম্ভব।
৪. জাম্পিং রোপ:
এর সঙ্গে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মতো কিছু নেই। ছোটবেলায় দড়ি লাফ খেলেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। আর ছোটবেলার সেই খেলা এখানে আপনার ওজন কমানোর এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। মাত্র ৪ মাস দৈনিক ১০-১৫ মিনিটের দড়ি লাফে উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে আপনার ওজন।
৫. স্ট্রেচিং ম্যাট:
সাধারণত যোগাসনের জন্য ব্যবহার করা হয় বলে একে যোগাসনের ম্যাটও বলা হয়। হাল্কা, নরম প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি এই ম্যাটের সঙ্গে থাকা নির্দেশনা বইতে ওজন কমানোর কিছু কৌশল দেওয়া থাকে। নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করে শরীরের ওজন কমাতে পারেন।
ঘরে কিংবা বাইরে; শরীর চর্চায় যেকোনো উপকরণ ব্যবহারের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। নিয়ম মেনে ও ধৈর্য্য সহকারে শরীর চর্চা চালিয়ে গেলে সাফল্য অবশ্যই আসবে। এতে মনোবলও বাড়ে।