মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষ সৃষ্টির পাশাপাশি পাপ-পূণ্যকেও সৃষ্টি করেছেন। আবার তিনি এই পাপ থেকে বেঁচে পূণ্যের পথে চলার মতো শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে মানুষকে বিবেক দান করেছেন। মহান স্রষ্টা চাইলে যখন-তখন যে কাউকে যে কোনো কারণে খুশি হয়ে তার বান্দার সকল গোনাহ মাফ করে দিতে পারেন। ঠিক যেমনটি আশুরার দিনে রোজা রাখলে মহান আল্লাহ সেই বান্দার পেছনের এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেন। তবে এক্ষেত্রে বান্দার ইবাদত মহান আল্লাহর নিকট পৌঁছানোর দায়িত্ব একমাত্র মানুষের। এজন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তার ইবাদতে অবশ্যই মগ্ন থাকা চাই।
হজরত আবু কাতাদাহ আল-আনসারী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশুরার রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ইরশাদ করেন, এ রোজার মাধ্যমে বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ হয়। (ইবনে মাজাহ, মুসলিম শরিফ)।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় তাশরিফ আনলেন এবং ইহুদিদের দেখলেন আশুরার দিনে রোজা রাখতে, তখন জিজ্ঞেস করলেন তোমরা কেন এ দিন রোজা রাখো? তারা বললো, এটা সেই মহান দিন, যে দিনে আল্লাহতায়ালা বনি ইসরাঈলকে শত্রুর কবল থেকে মুক্তি দিয়ে ছিলেন। ফলে হজরত মুসা (আ.) এ দিনে রোজা রাখতেন। তিনি ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের চেয়ে মুসা (আ.) এর যে কোনো বিষয়ে বেশি হকদার। ফলে তিনি নিজে রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখতে আদেশ করলেন। (বুখারি ৩৩৯০)।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আশুরার রোজা রাখো এবং ইহুদিদের সাদৃশ্যতা পরিহার কর। আশুরার আগে বা পরে আরও একদিন রোজা রাখো।’ (মুসনাদে আহমাদ ১/২৪১)।
অন্য বর্ণনায় এসেছে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আশুরার রোজা রাখলেন এবং এ রোজা রাখতে আদেশ করলেন, তখন সাহাবায়ে কিরাম (রা.) আরজ করলেন ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই দিনকে তো ইহুদি ও নাসারারা সম্মান করে। ফলে তিনি ইরশাদ করলেন, আমি যদি আগামী বছর হায়াতে থাকি তাহলে অবশ্যই ৯ তারিখেও রোজা রাখবো। (মুসলিম শরিফ ১/৩৫৯)।