রোববার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
চির বিদায় নিয়ে গুলশান হামলায় যায় জঙ্গিরা
প্রকাশিত - সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬ ১২:০৭ পিএম
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে চির বিদায় নিয়ে গুলশান হামলায় অংশ নেয় জঙ্গিরা। যাবার আগে একসঙ্গে সবাই নামাজ পড়ে। ভাল মন্দ খাওয়া দাওয়াও করে। এরপর সবার সঙ্গে কোলাকুলি করে বেরিয় যায়। আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছে কিশোর জঙ্গি তাহরীম করিম ওরফে রাসেল। তিন দিনের রিমান্ড শেষে গত বৃহস্পতিবার রাসেল আদালতে এ জবানবন্দী দেয়।
জবানবন্দী শেষে আদালতের নির্দেশে তাকে পাঠানো হয় টঙ্গি কিশোর সংশোধন কারাগারে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের উপ-কমিশনার মুহিদুল ইসলাম।
গত ১০ সেপ্টম্বর রাজধানীর আজিমপুরে জঙ্গিদের আস্তানায় অভিযান চালানোর সময় নিহত হয় রাসেলের বাবা তানভীর কাদেরী ওরফে আব্দুল করিম। ওই দিন চৌদ্দ বছরের কিশোর রাসেল ছুরি নিয়ে পুলিশের উপর হামলার চেষ্টা করে। আজিমপুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এই কিশোর ৫ নম্বর আসামি।
গত ১৮ সেপ্টম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিটিটিসি ইউনিটের সহকারী কমিশনার (এসি) আহসানুল হক ওই কিশোরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চান। শুনানিশেষে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ পরদিন রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকার গোয়েন্দা দফতরে আনে।
সিটিটিসি ইউনিটের উপ-কমিশনার মুহিদুল ইসলাম জানান, জবানবন্দীতে রাসেল জানান, তার বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা তানভীর কাদেরী ওরফে আব্দুল করিম হজ্ব করে আসার পরই তার মধ্যে পরিবর্তন দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তিনি জঙ্গি কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। তার নির্দেশমতই রাসেল জঙ্গি কর্মকান্ডে উদ্দুদ্ধ হয়। ওই সময় সে উত্তরার মাস্টারমাইন্ড স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। জঙ্গি কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ায় সে পড়াশুনা বন্ধ করে দেয়। তার এক জমজ ভাইও রয়েছে। সেই ভাইকে তার বারা কোথায় রেখে এসেছে তা সে জানে না। তার ধারণা তাকেও কোন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
রাসেল জানায়, ১ জুলাই গুলশানে হামলায় সময় তারা সবাই বসুন্ধরার বাসায় ছিল। গুলশান হামলায় অংশগ্রহণকারীরাও সেখানে ছিল। ওই দিন বাসায় ভাল খাবারদাবারের আয়োজন করা হয়। সবাই মিলে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করে। হামলাকারীরা বাসার অন্যদের সঙ্গে কোলাকুলি ও সালাম জানিয়ে বিদায় নেয়।
রাসেল জানায়, হামলার পরপরই তারা বারিধারার বাসা ছেড়ে পল্লবীর রূপনগরে বাসায় অবস্থান করে। সেখানে পুলিশ অভিযান চালাতে পারে এ আশংকায় তারা মাস দেড়েক আগে আজিমপুরের ২০৯/৫ পিলখানা রোডের একটি ছয় তলা আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় আসে।
উপ-কমিশনার মুহিদুল ইসলাম জানান, রাসেল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তার বাবার কাছে প্রচুর টাকা ছিল। ঐ টাকা কোত্থেকে আসত বা তার বাবা কিভাবে টাকা পেত তা সে জানে না।
উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে লালবাগ থানাধীন আজিমপুরের ২০৯/৫ পিলখানা রোডের একটি ছয় তলা আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পরে ওই বাসা থেকে এক জঙ্গির মৃতদেহ, আহত তিন নারী জঙ্গি ও নিহত জঙ্গি করিমের এই কিশোর ছেলেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Copyright © 2024 Sunbd24 - Latest News Update About DSE, CSE Stock market.. All rights reserved.