একটি বেসরকারি টেলিভিশনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংঘাত-সহিংসতা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের নারী সঞ্চালকের সঙ্গে অশোভন আচরণের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
এ ঘটনায় প্রকাশ্যে ও সংশ্লিষ্ট সঞ্চালকের কাছে ক্ষমা চাইতে রোববার আইনি নোটিশ পাটান ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। প্রকাশ্য ও লিখিতভাবে ক্ষমা না চাইলে সাবেক বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল নোটিশে।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিচারপতি মানিক এই আইনি নোটিশের জবাব দেন বলে জানান আইনজীবী ফাওজিয়া করিম।
তিনি বলেন, সোমবার বিকাল ৫টা ৩৮ মিনিটে উনি (বিচারপতি মানিক) আমার হোটস অ্যাপে একটা রিপ্লাই দিয়েছেন। সেখানে উনি প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এবং উনি সেখানে বলেছেন, ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানাতে পারেন।
আইনি নোটিশের জবাবে সাবেক বিচারপতি মানিক লিখেছেন, তিনি একজন হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিসের রোগী।
টক শোর দিন তাকে অনেক লম্বা পথ হেঁটে প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হয়েছিল। ফলে তার ব্লাড সুগার নেমে যায় ও ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায় এবং একই সঙ্গে তিনি প্রচুর ক্লান্ত বোধ করছিলেন। যার কারণে তিনি তার নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি তার এরূপ আচরণের জন্যে উপস্থাপিকার কাছে গভীরভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এর আগে সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে এ নিয়ে সাংবাদিকদের ফাওজিয়া করিম বলেন, সাবেক একজন বিচারপতির এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। বিচারপতি থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময় বিতর্কিত রায় দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাক স্বাধীনতা না থাকার কারণে কেউ কিছু বলতে পারেনি। এখন আমাদের বাচ্চারা সেই বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছে।
ফাওজিয়া করিম বলেন, বিচারপতি মানিক মানসিকভাবে অসুস্থ হলে তিনি এমনভাবে কেন ঘুরে বেড়ান।
আর টেলিভিশনের টকশোগুলো যারা চালান তারাই বা কেন এমন অসুস্থ মানুষকে অতিথি হিসেবে নিয়ে যান। কাকে টকশোতে নেওয়া যাবে আর কাকে পরিহার করতে হবে, এনিয়ে একটি নীতিমালা থাকা উচিত।
কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে আলোচক হিসেবে অংশ নেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। কিন্তু আলোচনার একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে সঞ্চালকের ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার সঞ্চালকের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন।
এখানেই শেষ নয়, অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে সঞ্চালককে প্রকাশ অযোগ্য ভাষায় গালি দেন বিচারপতি মানিক। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এএ