কথাটা শুনে সবারই চোখ কপালে উঠবে। সাফল্য পেতে ঘুম হারাম করে খাটুনি করেন অনেকে। তাদের বিশ্বাস কাজ যত বেশি এবং ঘুম যত কম, সাফল্য আসবে তত দ্রুত। অনেক কর্মক্ষেত্রে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখানো হয় ঘুমের পেছনে সময় ব্যয় করা মানেই ক্ষতি। ঘুমের সময় কোথায় তাদের? আসলে কিন্তু ঘুম ঠিকমতো হলে আপনারই লাভ। বেশ কিছু উপায় ঘুম আপনার জন্য সাফল্য বয়ে আনতে পারে। সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকেই উঠে এসেছে এসব তথ্য।
অনেকেই বড়াই করে বলেন, তারা নাকি লম্বা একটা সময় না ঘুমিয়ে শুধু কাজ করে কাটিয়েছেন। এমনটা করলে সাফল্য আসবে এ ধারণা ঠিক নয়। বরং হাফিংটন পোষ্টের হেড আরিয়ানা হাফিংটন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। তার মতো পর্যায়ের সাফল্য চাইলে আপনারও দরকার হবে ঘুম।
সহজভাবে চিন্তা করলে মনে হবে, ঘুমের সময় কমিয়ে দিলে কাজ করার সময় বেড়ে যাবে। আসলে কিন্তু ঘুম কম হলে সেই মানুষের মস্তিষ্ক তার ক্ষমতার সবটুকু দিয়ে কাজ করতে পারে না। National Sleep Foundation এর এই গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, নিয়মিত কমপক্ষে সাত ঘণ্টার ঘুম দরকার হয় প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের। এ ছাড়া তাদের ঘুম ঘুম ভাবটা থেকেই যায়। শরীর বিশ্রামের অভাবে ভুগতে থাকে।
ঘুমের পেছনে এভাবে সময় ব্যয় করাটাকে কিন্তু মোটেই সময় নষ্ট করা বলে মনে করবেন না। বরং চিন্তা করুন ঠিকমতো ঘুমালে আপনার সব কাজই আরো ভালোভাবে হবে।
সফল হতে হলে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন কিছু শিখতে হবে। শেখার মাঝেই কাটাতে হবে জীবন। Harvard Healthy Sleep website এর মতে, ঘুমের অভাব আমাদের মনোযোগ দেবার ক্ষমতা নষ্ট করে এবং নতুন কিছু শেখা কষ্টকর করে ফেলে। নতুন নতুন তথ্য মনে রাখার জন্যেও ঘুমটা উপকারি।
সৃজনশীল হওয়াটা অনেক ক্ষেত্রেই সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর নিয়মিত ঘুম সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। কিন্তু ঘুম না হওয়া থেকে সৃষ্ট ক্লান্তি মস্তিষ্কের গতি কমিয়ে দেয় এবং নতুন কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে না।
আপনার ঘুম না হলে ভুলের সংখ্যা নিঃসন্দেহে বাড়বে। কোনো কিছু মনে করতে ভুল হবে, কাজ করতে ভুল হবে, সিদ্ধান্ত নিতেও ভুল হবে। অন্তত বেশিরভাগ sleep research তাই বলে। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এটা তাদের ফলাফল খারাপ করে দেয়।
ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে গাড়ি চালানোর ফলে প্রতিবছর প্রচুর মানুষ মারা যান। ১৬ ঘন্টা না ঘুমিয়ে থাকলেই অ্যাকসিডেন্টের এই সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়াও ২৪ ঘন্টার টানা শিফটে কাজ করলেও অ্যাকসিডেন্টের সম্ভাবনা বাড়ে।
শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতেও সাহায্য করতে পারে ঘুম। আপনি যখন ঘুমের অভাবে ভুগছেন তখন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হয় দুর্বল। এতে সহজেই আপনার জ্বর, ঠাণ্ডা এগুলোর সম্ভাবনা থাকে।
যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়া অবস্থায় আমাদের মন-মেজাজ ভালো থাকে ফলে কাজের প্রতি আমাদের আগ্রহও থাকে অনেক বেশি। সব দিক দিয়েই আমাদের দক্ষতা ভালো থাকে।
দেখে নিলেন তো, ঘুম বাদ দিলে নয়, বরং ঘুম পর্যাপ্ত পরিমাণে হলেই আপনার সাফল্য আসবে। তাই আর রাত না করে ঘুমিয়ে পড়ুন। আপনার জন্য সাফল্য অপেক্ষা করছে!
সানবিডি/ঢাকা/এসএস