জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পুনরায় কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'ধর্মের নামে কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে বরদাশত করা হবে না।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে কোন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের স্থান হবে না। ধর্মের নামে কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে আমরা বরদাশত করবো না।'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বিকেলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে লালবাগের ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে এসে একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে- ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ডিএন চ্যাটার্জী, কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার পাল, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তাপস কুমার পাল, এলাকার সাংসদ হাজী মো. সেলিম এমপি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেনগুপ্ত বক্তব্য রাখেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সেবায়েত প্রদীপ কুমার চক্রবর্তীসহ মন্দিরে আগত ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীনতা সংগ্রাম-মুক্তিযুদ্ধে এদেশের প্রতিটি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রের মানুষ এক হয়ে যুদ্ধ করে এদেশকে স্বাধীন করেছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সকলের রক্ত একাকার হয়ে মিশে গেছে এ দেশের মাটিতে। মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সকলে এদেশের স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে। তাই সকল ধর্মের মানুষ তাদের এই দেশটাতে ঐক্যবদ্ধভাবে বসবাস করবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।'
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব প্রদানকারী দল। তাই এই দল যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের উন্নয়ন হয়। কারণ মানুষের কল্যাণ চিন্তাটাই আমাদের কাছে সব থেকে বড় বলে তিনি বক্তৃতায় বলেন।
ইসলাম শান্তির ধর্ম, সৌহার্দ্যরে ধর্ম, ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। এখানে কিন্তু জঙ্গিবাদের আসলে কোন জায়গা নাই। কিন্তু যারা এই সন্ত্রাস সৃষ্টি করে তারা ধর্মবিরোধী কাজই করে। ধর্মের অবমাননা করে এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমাদের ইসলাম ধর্মে স্পষ্ট বলা রয়েছে- 'লাকুম দিনুকুম ওয়ালিয়াদিন' অর্থাৎ যার যার ধর্ম তার তার কাছে। সবাই নিজস্ব মত ও পথ অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মকর্ম পালন করবে।"
তিনি আরো বলেন, 'সকল ধর্মেই কিন্তু শান্তির কথা বলা হয়েছে, মানবতার কথা, মানব কল্যাণ, মানব উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। কাজেই এটা আমাদেরও মেনে চলতে হবে।'
প্রধানমন্ত্রী দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীর দিনে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, 'সারাদেশে বিপুল উৎসাহের সঙ্গে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। আমি চাই আপনারা প্রার্থনা করবেন আমাদের এই দেশটার যেন উন্নতি হয়। দেশের মানুষ যেন শান্তিতে বসবাস করে। আমরা বাংলাদেশকে যেন দক্ষিণ এশিয়ায় একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। প্রধানমন্ত্রী পরে রাজধানীর টিকাটুলীর রামকৃষ্ণ মিশন পূজা মণ্ডপও পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, সারাদেশে ২৯ হাজার ৩৯৫টি পূজা মণ্ডপে এবারের দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। -বাসস।