দেশের সরকারি বেসরকারি সকল নন-লাইফ বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যান ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষ-১ এ উক্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আইডিআরএ’র নতুন চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলমের সভাপতিত্ব করেন।
সভায় দেশের নন-লাইফ বীমা খাতের নানান বিষয়ে আলোচনা হয়। একইসঙ্গে এ খাতের উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে নানান প্রস্তাব ও পরামর্শ উঠে আসে মতবিনিময় সভায়। কর্তৃপক্ষের সকল সদস্য, নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক, উপ-পরিচালক, সাধারণ বীমা করপোরেশনের প্রতিনিধি এবং নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় পরিচয় পর্ব শেষে নন-লাইফ বীমা কোম্পানির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ইমাম শাহীন, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা চৌধুরী, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান তাবিথ আঊয়াল, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ পাভেল এবং গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সায়ীদ আহমেদ।
নন-লাইফ বীমা ব্যবসার প্রধান প্রতিবন্ধকতা যেমন- অতিরিক্ত কমিশন দেয়ার চর্চা , সাধারণ বীমা করপোরেশনের সাথে সুসম্পর্কের অভাব, সড়ক আইনের জন্য মটর ইন্স্যুরেন্স বন্ধ হয়ে যাওয়া, কিছু বীমা কোম্পানির এবং জনগণের সচেতনতার অভাব ইত্যাদি কাটিয়ে উঠতে পারলে ব্যবসা পরিচালনা সহজ হবে বলে নন-লাইফ সংশ্লিষ্টরা প্রত্যাশা করেন। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানের দিক নির্দেশনা অনুসরণ করে তাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব তারা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন ।
কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম জুলাই-আগস্টের গণঅভূত্থানের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী ছাত্র-জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের এ ঐতিহাসিক বিজয়ের সময়ে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে, রাষ্ট্র ব্যবস্থার মেরামত-সংস্কারে বীমা সেক্টরের ব্যবসার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনতে হবে, যা জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে। মূলত গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করা এবং বীমা সেক্টরের উন্নয়ন সাধন করাই বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রধান কাজ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বিশ্বাস করেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও বীমার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি এবং মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার বিকল্প নেই। গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মনোযোগী হওয়া, সকলের নৈতিকতা-মূল্যবোধের সদ্ব্যবহার করা, নিষ্ঠা-আন্তরিকতার সাথে কাজ করার মাধ্যমে বীমা সেক্টরের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
এক্ষেত্রে পুরাতন রীতিনীতি-কৌশল পরিহার করে, যুগোপযোগী পরিবর্তন আনয়নে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন, যা করা সম্ভব হলে বীমা সেক্টরে ইতিবাচক পরিবর্তন দ্বারা দেশের সার্বিক অর্থনীতির প্রসারে বীমা খাত উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবে বলেন মনে করেন ড. এম আসলাম আলম। তিনি বলেন, আইনগত জটিলতা থাকলে, তা সংস্কারে ও বাস্তবায়নে নিবিড়ভাবে কাজ করবেন। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বীমা সেক্টরের উন্নয়নে সকলকে অভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করার জন্য সবার প্রতি তিনি আহবান জানান।
এএ