পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিএসআরএম গ্রুপের দুই কোম্পানির শেয়ারে বড় ধরনের আশাভঙ্গ হয়েছে অসংখ্য বিনিয়োগকারীর। অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদনে কোম্পানি দুটি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম মুনাফা দেখানোয় মারাত্মক হতাশ হয়েছেন বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী।
বিনিয়োগকারীদের হতাশার প্রতিফলন ঘটেছে কোম্পানি দুটির শেয়ারের দামে। সামগ্রিক বাজারেও পড়েছে এর প্রভাব।
রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিএসআরএম লিমিটেড এবং বিএসআরএম স্টিল লিমিটেড নামের কোম্পানি দুটির শেয়ারের দাম কমেছে ৮ শতাংশের বেশি হারে। অন্যদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ২৫ পয়েন্ট কমেছে।
উল্লেখ, গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত কোম্পানি দুটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে প্রথম দুই প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানি দুটির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে আগের প্রান্তিকের পাঁচ ভাগের একভাগ। অথচ বিনিয়োগকারীদের আশা ছিল, দ্বিতীয় প্রান্তিকের মুনাফা ও ইপিএস হতে পারে প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে বেশি।
প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দ্বিতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি-জুন’২০১৬) শেষে ছয় মাসে বিএসআরএম লিমিটেড শেয়ার প্রতি ৩ টাকা ২ পয়সা আয় করেছে। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস ছিল ২ টাকা ৫২ পয়সা। এ হিসেবে দ্বিতীয় প্রান্তিকেও কোম্পানিটির ইপিএস আড়াই টাকার কাছাকাছি হতে পারে বলে অনুমান করেছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বাস্তবে ইপিএস হয়েছে তাদের ধারণার পাঁচ ভাগের একভাগ মাত্র।
দুই প্রান্তিক মিলিয়ে যেখানে বিএসআরএম লিমিটেডের ইপিএস আশা করেছিলেন ৫ টাকার বেশি, সেখানে তা হয়েছে মাত্র ৩ টাকা।
অন্যদিকে বিএসআরএম স্টিলে গত প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে মাত্র ৯৩ পয়সা। অথচ প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস ছিল ২ টাকা ৭৫ পয়সা।
কোম্পানি দুটির আয় বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশার ধারে কাছে না থাকায় রোববার লেনদেনে এর তীব্র প্রভাব পড়ে। দুটি কোম্পানিরই শেয়ারের দাম ৮ শতাংশের বেশি কমে যায়।
আগের দিন যেখানে বিএসআরএম লিমিটেডের শেয়ারের দাম ছিল ১৭৫ টাকা ৫০ পয়সা, সেখানে রোববার এ শেয়ারের ক্লোজিং মূল্য দাঁড়ায় ১৬১ টাকা। একদিনে দাম কমে ১৫ টাকার বেশি। দিনের এক পর্যায়ে শেয়ারটির দাম প্রায় ১০ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
প্রায় একই চিত্র ছিল বিএসআরএম স্টিলের ক্ষেত্রেও।
অন্যদিকে রোববার বাজারে ডিএসইএক্স কমে যায় .৫০ শতাংশ। বিশ্লেষকদের মতে, বিএসআরএমের মত বড় কোম্পানির শেয়ারের মূল্য পতন সূচক এতোটা কমে যাওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে। তাছাড়া এত বড় কোম্পানির ইপিএসের কোনো ধারাবাহিকতা না থাকতে সামগ্রিক বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বিএসআরএমের আর্থিক প্রতিবেদন বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নতুন করে ফাটল ধরিয়েছে। তারা কোনো কোম্পানির উপরই ভরসা রাখতে পারছেন না। এর প্রভাব পড়ে রোববারের বাজারে। সূত্র: অর্থসূচক
সানবিডি/ঢাকা/এসএস