কুষ্টিয়ার নবাগত পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেছেন, সাংবাদিক ও পুলিশ একে অন্যের সহযোগী। গণমাধ্যমকর্মীরা যে কোনো ধরনের তথ্য আমাদের জানাতে পারেন। কুষ্টিয়ায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাই আমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
গতকাল শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ লাইন্সের সম্মেলন কক্ষে জেলার কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নবাগত পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের প্রতি বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ করে বলেন, সংবাদকর্মীরা তাদের ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে সুন্দর নিরাপদ সমাজ বিনির্মাণে অগ্ৰণী ভূমিকা পালন করতে পারেন। "আমি বিশ্বাস করি পুলিশ এবং সাংবাদিকদের মধ্যে একটা মেলবন্ধন আছে, সেটা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।"
তিনি বলেন, কুষ্টিয়ায় পুলিশের অফিসার ও ফোর্স চেঞ্জ হয়েছে। এক কর্মস্থল থেকে অন্য কর্মস্থলে যেতে একটু সময় লাগে। সরকারি বিধি অনুয়ায়ী বদলির ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১০ দিন জয়নিং লিভ পায়। কুষ্টিয়া থেকে যে পরিমাণ ফোর্স বদলি হয়ে চলে গেছে, সে পরিমাণ ফোর্স কুষ্টিয়ায় যোগদান করেননি। পুলিশের কার্যক্রম দ্রুতই পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
পুলিশ সুপার বলেন, ৫ আগস্টের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ কাজে ফিরতে একটু সময় নিয়েছে। বর্তমানে পুলিশের কার্যক্রম অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে, দ্রুতই পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে। বর্তমানে অপরাধের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পুলিশকে অপরাধের তথ্য দিন, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভায় জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, হত্যা, হত্যাচেষ্টা, গুরুত্বপূর্ণ মামলা, চোরাচালান, মাদক, জুয়া, ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, তথ্য প্রাপ্তিতে পুলিশের সহযোগিতাসহ পুলিশের সঙ্গে সংবাদকর্মীদের সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ও তুলে ধরেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
এ সময় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান দ্রুত সময়ে তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নসহ, সার্বিক বিষয়ে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে সাংবাদিকদের কাছে তথ্য চেয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
পুলিশ সুপার বলেন, পূজামণ্ডপগুলোতে ও লালন মেলায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে পুলিশ। পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবে। যাতে নির্বিঘ্নে দর্শনার্থীরা পূজামণ্ডপ ও লালন মেলায় ঘুরতে পারেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা করা সকল নাগরিকের নৈতিক, সামাজিক ও আইনি দায়িত্ব। এ বছর মাল্টি-লেয়ার্ড নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে পূজা উদযাপনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে পুলিশ। শান্তি ও সম্প্রীতি বিঘ্নিত করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. তারেক জুবায়ের, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) পলাশ কান্তি নাথ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার্স ইনচার্জ সোহেল রানা, কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মাহফুজুল হক চৌধুরী, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, সাধারণ সম্পাদক আবু মনি জুবায়েদ রিপন, প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য আনিসুজ্জামান ডাবলু, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চুসহ শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
বিএইচ