ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেছেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে, নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করে নির্বাচন আয়োজন করা হবে। জনগণ যাতে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, তার ব্যবস্থা আমরা করব।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বৌদ্ধ সমিতির এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
খালিদ হোসাইন বলেন, জনগণ যাতে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, তার ব্যবস্থা আমরা করবো। এতদিন ভোটের কালচারটা আমাদের সমাজ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমরা ভোটার লিস্ট হালনাগাদ করে, নির্বাচন কমিশনকে সাজিয়ে একটা সুষ্ঠু সুন্দর অবাধ নির্বাচন দেবো।
তিনি আরও বলেন, আপনারা আপনাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। যারা জনগণের ম্যান্ডেড পাবে আমরা তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেবো। আমরা শাসন করতে আসি নাই, আগামী দিনে যারা শাসন করবে তাদের জন্য পথ খুলে দিতে এসেছি। আপনাদের সহযোগিতা দিতে চাই, আপনারা আমাদের হাতকে শক্তিশালী করুন।
বাংলাদেশকে সাজানো বাগান উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ সাজানো বাগানের মতো। বাগানের ভেতরে যেমন বর্ণিল পুষ্পরাজি থাকে তেমনি আমাদের বাংলাদেশে হিন্দু বৌদ্ধ মুসলমান, খিস্টান, নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী আছে। এটাকে আমাদের পরিচর্যা করতে হবে। লালন করতে হবে। আর নাহলে বাগানে ফুল ফুটবে না। বাগানের গাছ মারা যাবে। এই ঐতিহ্য পারস্পরিক সৌহার্দ্য আমাদের লালন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা যদি আগামী দিনের সুন্দর বাংলাদেশ চাই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই তাহলে আমাদের একে অপরের হাত ধরে এগিয়ে যেতে হবে। বিভেদ আমাদের ধ্বংস করে দেবে, সংঘাত আমাদেরকে পিছিয়ে ফেলবে।
সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের কোনো ধর্ম নেই উল্লেখ করে আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, কিছু দুর্বৃত্ত সব ধর্মের লোকদের মধ্যে আছে। এগুলোর কোনো ধর্ম নেই। এরা ক্রিমিনাল। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য উপসানলয়ে হামলা চালায়। এদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রত্যেককে সোচ্চার হতে হবে। তারা আমাদের সম্প্রীতিকে লালিত ঐতিহ্যকে যাতে ধ্বংস করতে না পারে।
অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ সমিতির নেতারা শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় ছুটির দাবি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশের আশ্বাস দিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আপনারা শুভ প্রবারণা পূর্ণিমায় ছুটির জন্য বলেছেন। এটা আমি মন্ত্রী হিসেবে পারি না। এটা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা লাগবে। আপনাদের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করলে আপনাদের হয়ে আমি সুপারিশ করবো।
উপসংঘরাজ শাসনপ্রিয় মহাস্থবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও কেন্দ্রীয় বিএনপির উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া। উদ্বোধন করেন প্রজ্ঞাসারথী প্রজ্ঞানন্দ মহাস্থবির। প্রধান জ্ঞাতি ছিলেন উপসংঘরাজ সদ্ধর্মবারিধি প্রিয়দর্শী মহাস্থবির। প্রধান সদ্ধর্মদেশক ছিলেন বিশ্বনাগরিক ড. ধর্মকীর্তি মহাস্থবির।
প্রফেসর তুষার কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপিক ববি বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইউএসটিসির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন আদর্শ কুমার বড়ুয়া, অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক সত্যপ্রিয় বড়ুয়া প্রমুখ।
বিএইচ