২৮ লাখ টাকা মূল্য মানের স্বর্ণ পেয়েও ফেরত দিলেন রিক্সা চালক

আপডেট: ২০১৫-১০-২৪ ১২:১৪:৩৭


Noor Hossenরিকশা চালিয়ে সংসার চলে। একদিন তেমন ভাড়া না জুটলে অর্ধাহারে কাটাতে হয় পরিবারকে। সেই রিকশাচালকের হাতেই এসেছিল প্রায় দু’লক্ষ টাকার সোনার গয়না ভর্তি ব্যাগ। ফেলে গিয়েছিলেন আরোহী দম্পতি। রিকশাচালক অবশ্য সোজা তা নিয়ে জমা দিয়েছেন থানায়। শুনে আশ্চর্য হলেও সম্প্রতি এমনটাই ঘটেছে ভারতের উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে।

রাতের ওই ঘটনার পরে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে ‘হিরো’ বনে গেছেন মুহাম্মদ নুর। ইসলামপুর থানার মুকসেদুর রহমান নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা  বলেন, ‘‘এখনকার দিনে এমন মানুষের খোঁজ মেলাই ভার। কিন্তু, এমন মানুষেরা যে রয়েছেন, সেটা ফের প্রমাণ করে দিলেন ওই রিকশাচালক।’’

চলতি পুজার নবমীর রাতে ইসলামপুরের থানার কংগ্রেস রোডের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী রতন পাল তার স্ত্রী রুমকিদেবী পালকে নিয়ে পাওয়ার হাউস এলাকার শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন। রুমকিদেবী জানান, বাবার বাড়ি থেকে সেজে পুজা দেখতে বের হবেন ভেবে সব গয়না একটি ব্যাগে নেন। প্রায় ছ’ভরি সোনার গয়না ছিল। রিকশায় সেটি  ফেলে যান তারা। এর পরই রিকশার খোঁজ করতে থাকেন। বেশ কয়েকবার চৌরঙ্গী মোড় এলাকাতে রিকশা চালকদের কাছে গেলেও তাকে খুঁজে পাননি। বিষয়টি থানায় জানান। পুজার সময় গয়না হারিয়ে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলেন রুমকিদেবী।

ওই রিকশাচালক মুহাম্মদ নুরের অবশ্য কয়েক ঘণ্টা পরে ব্যাগের বিষয়টি নজরে আসে। এরপরই এলাকার এক পুজো-কমিটির সদস্যকে বিষয়টি জানিয়ে থানায় যান তিনি। মোবাইল থেকে তারা ফোনও করেন রতনবাবুর শ্বশুর বাড়িতে। পরে পুলিশের সামনেই গয়না-সহ ব্যাগটি রতনবাবুদের তুলে দেন নুর। ওর সততার তুলনা হয় না, বলছিলেন রতনবাবু।

অভাবের সংসারের হাল ধরতে গিয়ে হিমশিম খেলেও নিজের সততার সঙ্গে এতটুকুও আপস করতে রাজি নন মুহাম্মদ নুর। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, গরিব হওয়ায় তাঁর বাড়িতে মোবাইল পর্যন্ত নেই। মোবাইল থেকে ফোন কীভাবে করে তাও জানেন না তিনি। তাই পুজা কমিটির এক সদস্যের সাহায্যে তিনি রতনবাবুদের বিষয়টি জানান। তবে এই কাজ করাটা তার স্বাভাবিক দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে বলে মনে করছেন নুর। তার কথায়, ‘‘অন্যের টাকা নিয়ে আমি কী করব, খাটনি করে যা রোজগার করব তা দিয়েই সংসার চলে যাবে।’’

সানবিডি/ঢাকা/এস এস