বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, জানা যাবে আজ রোববার। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে আপিল বিভাগের দেয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদন শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ১ নম্বরে রাখা হয়েছে।
গত ১৬ অক্টোবর দেশের সর্বোচ্চ আদালতে ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে হাইকোর্ট ঘেরাও করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর কথা বলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা। সেইসঙ্গে তারা কোনো বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না বলে জানান তিনি।
রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, ‘বিচারপতিদের অপসারণের কোনো বিধান এখন না থাকায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের রিভিউটি আগামী ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগে ১ নম্বর আইটেমে শুনানির জন্য থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
এর আগে গত ১৫ আগস্ট আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৩৭ নম্বর ক্রমিকে থাকা আইটেমটি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগে মেনশন করেন রিটকারী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরশেদ।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আদালতকে বলেন, ‘এটার বিষয়ে ইনস্ট্রাকশন দরকার। তাই সময় চাচ্ছি। এরপর সর্বোচ্চ আদালত বলেন, ‘ওয়ান উইক আফটার ভ্যাকেশন’ এটি শুনানির জন্য আসবে।’
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়। ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশ হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে একটি রিট করেন। সে রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
হাইকোর্টের দেয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। সে আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন। বহুল আলোচিত ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে, দেশের গণতন্ত্র, রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, সুশাসন, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। তবে আপিল বিভাগের দেয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
বিএইচ