ভিত্তিহীন প্রচ্ছেদে ঝুলে আছে রূপালী ব্যাংকের এমডি নিয়োগ
সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৪-১০-২৩ ২৩:২৪:৪৫
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গত আগস্টে সরকারের পালাবদলের মাত্র আড়াই মাসেই একযোগে ১০ টি সরকারী ও বিশেষায়িত ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও নিয়োগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে রাষ্ট্রয়ত্ত্ব সোনালী, জনতা, অগ্রণীসহ ৯ ব্যাংকের এমডিরা ইতোমধ্যে যোগদান করেছেন। কিন্তু এডিটের মাধ্যমে বিকৃত এবং ভিত্তিহীন একটি কবিতার প্রচ্ছদকে ইস্যু করে রূপালী ব্যাংকের এমডি মো. আব্দুর রহিমের নিয়োগ ঝুলে গেছে। যদিও ‘মাসিক জনপ্রশাসনে’ প্রকাশিত তাঁর সেই ‘নি:শেষে সৃষ্টি’ এবং ‘বৃক্ষের শিক্ষা’ কবিতার প্রচ্ছদ বিকৃতির বিষয়ে ভুল স্বীকার করেছেন সাময়িকীটির সম্পাদক এবং প্রকাশক নঈম মাশরেকী।
রূপালী ব্যাংকের এমডি হিসাবে সুপারিশকৃত মো. আব্দুর রহিমের নিয়োগ ঝুলে থাকার বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, একটি মহল তাঁর রচিত ‘নি:শেষে সৃষ্টি’ এবং ‘বৃক্ষের শিক্ষা’ কবিতার প্রচ্ছদে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিয়ে আব্দুর রহিমকে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দেওয়ার চেষ্ট করা হয়। আর ভিত্তিহীন অভিযোগটি তদন্ত এবং যাচাই ছাড়াই আমলে নিয়ে নিয়োগ বন্ধ রাখা রেখেছে কর্তৃপক্ষ। অথচ এমডি হিসাবে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটি তাঁর সঙ্গে পতিত সরকারের কোন সংশ্লিষ্ট খুজে পায়নি বলে নিয়োগে সুপারিশ করে। এমনকি তাঁর দীর্ঘ ২৬ বছরের ক্যারিয়ারে আওয়ামী পন্থীদের দ্বারা বঞ্চিতের অভিযোগ রয়েছে। তবে যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা এবং শক্তিশালী নৈতিকাতা সহ্য করতে না পেরে একটি স্বার্থান্বেষী মহল রটনা ছড়াচ্ছেন। ।
সোশ্যাল মিডিয়াল কবিতার প্রচ্ছদর বিষয়ে জানতে চাইলে মাসিক জনপ্রশাসনের প্রকাশক এবং সম্পাদক নঈম মাশরেকী বলেন, মূলত ২০২২ সালে আগস্ট সংখ্যায় ‘নি:শেষে সৃষ্টি’ এবং ‘বৃক্ষের শিক্ষা’ কবিতা প্রকাশ পায়। কবির লেখায় কোন প্রচ্ছদ ছিল না। তবে আগস্ট সংখ্যা হওয়ায় একটি প্রচ্ছদ দরকার ছিল। তখন ভুল বশত হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রচ্ছদ যোগ করা হয়। সেটিও এডিট করে কবির ছবির সঙ্গে কম্পিউটার অপারেটর নতুন প্রচ্ছদ যুক্ত করে। এ ভুলের জন্য আব্দুর রহিম প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু ছাপানো ভুল সংশোধনের সুযোগ নেই। এখন তিনি মামলা করলেও আমাদের ভুল স্বীকার ছাড়া কিছু করার নেই।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আব্দুর রহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে বিএসসি সম্মান এবং এমএসি সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯৮ সালে রূপালী ব্যাংকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন। পরে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব শেষে ২০২১ সালে ব্যাংকটির উপ-ব্যবস্থাপক পরিচালক (ডিএমডি) হিসাবে পদন্নতি পান। পরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং বেসিক ব্যাংকে সুনামের সঙ্গে ডিএমডি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে ডিএমডি হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর স্থায়ী ঠিকানা মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা। তিনি সহ তার পরিবারের কেই আওয়ামী লীগে রাজনিতির সঙ্গে জড়িত না। তবে সততা এবং যোগ্যতায় তিনি আপোষহীন। তিনি ব্যাংকিং ক্যারিয়ারের পাশাপাশি গবেষনাকর্ম এবং কবিতা চর্চায় ব্রত রয়েছেন।
এ বিষয়ে মো. আব্দুর রহিম বলেন, আমার লেখা কবিতায় বিকৃত প্রচ্ছদ যুক্ত করা হয়েছে। এটা নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলনাম। আর একটা ঠুনকো বিষয়ে এমডি পদে নিয়োগ ঝুলে রাখা মেধাবী এবং যোগ্যদের জন্য অসম্মানের। আর আমার বিষয়ে যাচাই কমিটি সব ইতিবাচক পেয়েছে বলেই নিয়োগের সুপারিশ করেছে। আমি নিয়োগ বিলম্বে বিব্রত। তবে এ বিষয়ে এফআইডির অতিরিক্ত সচিব বদরে মুনির ফেরদৌস জানান, একটা বিশেষ কারণে নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা দেশে ফিরলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।