নাম, যশ, খ্যাতি থাকলেও পুত্রসন্তান জন্মের পর প্রসব পরবর্তী হতাশায় ভুগেছিলেন ব্রিটিশ গায়িকা অ্যাডেল। বিষণ্নতা ঘিরে ধরার কারণে তারুণ্যে থেরাপি নিতে হয়েছিলো তাকে। এগুলোকে জীবনের সবচেয়ে দুঃসময় হিসেবে মনে করেন তিনি।
ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনের ডিসেম্বর সংখ্যার প্রচ্ছদের সাক্ষাৎকারে অকপটে এসব ঘটনার কথা জানান অ্যাডেল। সোমবার (৩১ অক্টোবর) ম্যাগাজিনটির ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
‘টোয়েন্টি ফাইভ’ অ্যালবামের সাফল্যের অংশ হিসেবে দশ মাসের সংগীত সফরের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছেন অ্যাডেল। আর কখনও সংগীত সফরে না যেতে পারলে খুশি হবেন বলে জানান ২৮ বছর বয়সী এই তারকা!
অ্যাডেলের কথায়, ‘এখনও গান তৈরি করতেই বেশি ভালো লাগে। তবে আর কখনও প্রশংসা না শুনলেও খারাপ লাগবে না। যারা আমাকে অবিরাম সমর্থন জানান, শুধু তাদেরকে দেখার জন্যই সংগীত সফরে বেরিয়েছি। টাকা-পয়সা আমার কাছে মুখ্য নয়।’
১০টি গ্র্যামী পুরস্কার জয়ী অ্যাডেলের গাওয়া হৃদয়ছোঁয়া গানের তালিকায় রয়েছে ‘সামওয়ান লাইক ইউ’, ‘রোলিং ইন দ্য ডিপ’ প্রভৃতি। বরাবরই বিরহের গানকে প্রাধান্য দেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের অনেকটা অংশ আঁধারে ঢাকা। প্রচুর হতাশায় ভুগেছি। হতাশাগ্রস্ত যেমন হয়েছি, তেমনি উতরে উঠতেও পেরেছি অনায়াসে।’
যোগ করে অ্যাডেল বলেন, ‘জীবনটাকে হতাশা গ্রাস করতে শুরু করেছিলো দাদার মৃত্যুর পর। তখন আমার বয়স ১০ বছর। তবে আত্মহত্যার কথা কখনও ভাবিনি। হতাশা থেকে মুক্তি পেতে প্রচুর থেরাপি নিতে হয়েছে আমাকে। এরপর অনেক বছর এমন কিছু মনে হয়নি। তবে আমার পুত্রের জন্ম ও প্রসব পরবর্তী হতাশা চলে আসায় আবার এমন অনুভূতি হয়েছে।’
অ্যাডেলের ছেলে অ্যাঞ্জেলোর জন্ম হয় চার বছর আগে। তার বাবা সিমন কোনেকি। অস্কারজয়ী এই গায়িকা বলেন, ‘পুত্র হওয়ার পর প্রসব পরবর্তী বাজে বিষণ্নতায় ভুগেছি। তখর ভয়ে আঁতকে উঠতাম। আমার জানা মতে, ইংল্যান্ডে প্রসব পরবর্তী কিংবা সন্তানের জন্মোত্তর কোনো মা তাদেরকে কাছে রাখতে চায় না। নিজের কারণে সন্তানের ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করে মায়েরা। যথাযথভাবে দেখভাল করতে না পারার দুশ্চিন্তাও হয়।’
সন্তানের জন্মের পর ধূমপান ছেড়ে দিয়েছেন অ্যাডেল। আর এখন সপ্তাহে দুই গ্লাস ওয়াইন পান করেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানকে ঘিরে আমি পাগল ছিলাম! তবুও মনে হতো আমি উপযুক্ত মা নই। ভাবতাম মা হয়ে জীবনের সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা অনেকভাবে মনে হতে পারে।’
২০১১ সালে প্রকাশিত অ্যাডেলের ‘টোয়েন্টি ওয়ান’ বিশ্বব্যাপী ৩ কোটি ১০ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে। তবে এ অ্যালবামের সঙ্গে তার নতুন গানগুলোর সাদৃশ্য পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে রেখেছেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘অন্যের দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে পারি, ‘টোয়েন্টি ওয়ান’-এর মতো ভালো গান আর কখনও লিখতে পারবো না। তাছাড়া আমি তখনকার মতো অসংযত নই এখন। ওরকম হওয়ার মতো সময়ও আমার হাতে নেই।’