ফেনীতে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের (বাপসা) মানববন্ধনে হামলা করে সাংবাদিকসহ বিএনপির ১২ জনকে আহত করে ব্যানার ছিনিয়ে নিয়েছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতারা।
রোববার (৩ নভেম্বর) বিকালে জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এ ঘটনাটি ঘটে।
বাপসার ফেনী জেলা সভাপতি ও বিএনপি নেতা নাছির উদ্দিন লিটন জানান, ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের নিয়মবহির্ভূতভাবে লস্করহাট বাজার পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। আমি ওই বাজারের ব্যবসায়ী হওয়ায় অনিয়মের প্রতিবাদ জানাই। এ নিয়ে মোটবীতে উত্তেজনা চলে আসছিল।
এঘটনার জেরে 'গত বৃহস্পতিবার রাতে আমাকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। আমার চিৎকারে আশপাশের ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে আমি নিজে বাদী হয়ে ১ নভেম্বর ফেনী মডেল থানায় এজহার দাখিল করেছি। বিষয়টি আমি বাপসার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করলে তাঁরা মানববন্ধন করে এর প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত জানান। তারই আলোকে রোববার বিকেলে আমরা ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় মানববন্ধন করছিলাম'।
বাপসার ফেনী জেলা সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি নেতা ইসমাঈল হোসেন জানান, 'আমাদের মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ফেনী জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান নয়নের বক্তব্য চলাকালে হঠাৎ সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি টিপুর নেতৃত্বে একদল যুবক এসে আমাদের মারধর করে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। এঘটনায় ৩/৪ জন সাংবাদিকসহ আমি এবং বাপসা ও বিএনপির অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে'।
ঘটনাস্থলে পেশাগত দায়িত্বপালনরত সাংবাদিকরা জানান, বাপা ও শ্রমিক দলের মারামারির সময় শ্রমিক দলের হামলাকারীরা সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালায়। এসময় কয়েকজন সাংবাদিককে ধাক্কা দিয়ে মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালানো হয়েছে। এছাড়াও নাজিম উদ্দিন চৌধরী নামের এক গণমাধ্যম কর্মীর পকেটে থাকা ১৪ হাজার ৯০০ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় শ্রমিকদলের উশৃঙ্খল কর্মীরা। এ বিষয়ে তিনি আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত ফেনী সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মকছেদুল আলম টিপু বলেন, শহীদ মিনারে বহিস্কৃত বিএনপি নেতা ইসমাঈলের বক্তব্যে স্থানীয় বিএনপি নেতারা ক্ষুব্দ হয়। বিষয়টি আমি জানতে পেরে মানববন্ধনে আসা বিএনপি নেতা ও আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন নয়নকে সরিয়ে নিতে সেখানে গিয়েছিলাম। আমি অথবা শ্রমিক দল হামলার সঙ্গে জড়িত নয়।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানার ওসি মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা হস্তক্ষেপ করে ঘটনা নিবৃত করে।এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, বাপার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ২ বছর আগে বিএনপির মহাসচিবের নামে ফেনীর আদালতে মামলা করেছিলেন। এ ঘটনার জেরে তিনি বিএনপি থেকে বহিস্কৃত হন। বহিস্কার হওয়ার পর কাউকে বিএনপির নেতা বা কর্মী বলা সঠিক বলে আমি মনে করি না। তাছাড়া গ্রামের একটি বাজার নিয়ে বাপার সভাপতির সঙ্গে স্থানীয়দের বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধের জেরে তাদের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমি শুনেছি। এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত কিছু জানি না।
বিএইচ